লাতিনের নতুন হটস্পট সৌদি আরব

দিন যত যাচ্ছে, তত বাড়ছে সৌদির প্রো লিগ নিয়ে আলোচনা। একটা সময় তো ফুটবল দুনিয়ার সিংহভাগ সমর্থকও জানতেন না সৌদিতেও একটা লিগ চলে! তাঁরা ব্যস্ত থাকতেন ইউরোপ নিয়ে। এখন তাঁদেরও সেদিকের খবর রাখতে হচ্ছে। কী দিন পড়েছে! সৌদির ক্লাবগুলো এখন ইউরোপ-আমেরিকার বড় বড় ক্লাব কর্তাদের ঘুম হারাম করছে। কখন কাকে কোন দিক দিয়ে বুঝিয়ে নিয়ে যায়, কে জানে? অবস্থাটা এখন এমন দাঁড়িয়েছে।
সর্বশেষ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে মোটা অঙ্কের বেতন-ভাতা দিয়ে নিয়ে যায় আল নাসর। এর পর সবার নজর মরুর দেশটিতে। লিওনেল মেসিকে একের পর এক প্রস্তাব দিচ্ছে। সেই তালিকায় আছেন করিম বেনজেমা, লুকা মডরিচসহ ডজনখানেক খেলোয়াড়।
তবে হঠাৎ এভাবে কোমর বেঁধে নামার কারণ কী সৌদির? কিংবা বিদেশি খেলোয়াড়রাও সেদিকে এত আগ্রহী কেন– এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের। হ্যাঁ, এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণটা অর্থ। যাঁরা যাচ্ছেন বা যাবেন তাঁদের অনেকেই গেল ছয়-সাত বছরও যে অর্থ আয় করেছেন, সৌদিতে গেলে এক মৌসুমেই সেই পরিমাণ অর্থ পকেটে পুরবেন।
এ ছাড়া আরেকটি কারণও চোখে পড়ার মতো। সেটি হলো ইউরোপে গুরুত্ব কমে যাওয়া কিংবা বড় ক্লাবগুলোর মুখ ফিরিয়ে নেওয়া। যেমনটি হয়েছিল রোনালদোর বেলায়। রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার পর কোথায়ও স্বস্তিজনক পারফরম্যান্স করে দেখাতে পারেননি। যদিও সৌদিতে আল নাসরের হয়েও তাঁর প্রথম মৌসুম ভালো যায়নি। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আল ইত্তিহাদ। তবে সিআর সেভেন ব্যক্তিগতভাবে ভালো করেছেন। কেউ কেউ আবার জাতীয় দলে অবহেলিত হওয়ার পর বা বাড়তি আয়ের আশায় সৌদিকে নিশ্চিতে বেছে নেন।
অথচ একটা সময় বিদেশিদের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরত সৌদির ক্লাবগুলো। ২০০৩-০৪ মৌসুম থেকে ২০০৫-০৬ অবধি তিন মৌসুমে তাদের সব ক্লাবে মাত্র ৫৯ জন বিদেশি খেলোয়াড় ছিলেন। গত তিন মৌসুমে সেটা এত বেড়েছে, যা অনেকের কল্পনারও বাইরে। ২০২২-২৩ মৌসুমে তাদের সব ক্লাবে মোট ১২৮ জন বিদেশিকে পেল। সামনের মৌসুমে এই সংখ্যা ১৫০ হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
যেখানে মেসি, রামোস, বেনজেমা, মডরিচ, লরিস, আলবা, বুসকেটসের নামও শোনা যাচ্ছে। যদিও এরই মধ্যে বেনজেমা ও মডরিচ গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী আল ফয়সালের মন্তব্যে বোঝা মুশকিল কোনটি সত্য, আর কোনটি মিথ্যা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা বেনজেমা-মেসিকে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। সময়মতো ক্লাবগুলো এই ঘোষণা দেবে।
এদিকে ভিনদেশিদের মধ্যে লাতিনের খেলোয়াড়ই বেশি। দুই দর্শকনন্দিত দেশ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা যেন নতুন ঘাঁটি গেড়েছেন সৌদিতে। তাদের জনপ্রিয় তিন ক্লাব আল নাসর, আল হিলাল ও আল ইত্তিহাদে– এ দুই দেশের খেলোয়াড়ের সংখ্যা বেশি। তবে মেসির যাওয়া নিয়েই বেশি কথা হচ্ছে। জুলাইয়ে পিএসজি সৌদিতে যাবে। ২৫ জুলাই তাদের ম্যাচ আল নাসরের সঙ্গে। সেখানে একপাশে রোনালদো থাকলেও আরেকপাশে আর মেসিকে দেখা যাবে না। কেননা জুন মাস শেষ হলেই নতুন ঠিকানায় নাম লেখাবেন এই আর্জেন্টাইন।
এবিসিবি/এমআই