জনপ্রিয় তারকা সাকিবের ক্ষমা চাওয়া নিয়ে এবার ভারতে চরম বিতর্কের ঝড়
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বিতর্ক ছাড়ছে না। পশ্চিমবঙ্গের একটি কালীপূজায় যোগ দেয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ায় এবার বিতর্ক পৌঁছেছে ভারতের কলকাতায়।ভারতের নানা হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীও এখন সাকিবের প্রতি হতাশ।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শীর্ষস্থানীয় নেতা ড. সুরেন্দ্র জৈন জানিয়েছেন, সাকিবের মতো জনপ্রিয় তারকা ক্রিকেটারের কাছ থেকে তারা আরও নির্ভীক আচরণ প্রত্যাশা করেছিলেন।
তিনি জানান, কালীপূজায় যাওয়াটা কীভাবে বড় অপরাধ হতে পারে? অনেক হিন্দু তো নামাজেও সামিল হন। হিন্দু ও খ্রীষ্টানরা কি মুসলিমদের ইফতার পার্টিতে যোগ দেন না?
‘সাকিব মতো একজন নন্দিত ক্রিকেটার এই ইসলামী মৌলবাদের নিন্দা করবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল। সাকিবের কাছ থেকে এই বার্তাটাই চেয়েছিলাম, যে বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থান তখনই সম্ভব যখন পরস্পরের প্রতি সম্মান থাকে।’
বিবিসি বলছে, একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে কালীপূজার অনুষ্ঠানে যাওয়াটাও তার উচিত হয়নি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাকিব এই বক্তব্য ভারতের হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলোও মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছে না।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাবেক সভাপতি ও ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের সাবেক রাজ্যপাল তথাগত রায় জানান, বাংলাদেশের মৌলবাদের বিরুদ্ধে ভারতে যে যথেষ্ঠ প্রতিবাদ দানা বাঁধেনি – সাকিবকে নিয়ে এই বিতর্কে এটাই সবচেয়ে আক্ষেপের বিষয়।
এদিকে বাংলাদেশ থেকে বিতারিত ভারতে থাকা লেখিকা তসলিমা নাসরিন টুইট লেখেন, কালীপূজায় যাওয়ার জন্য সাকিব ক্ষমা চাওয়া মোটেই উচিত হয়নি।
যে মুসলিমরা পূজামণ্ডপে যান কিংবা হিন্দুদের প্রতি সহানুভূতিশীল, এতে তাদের হত্যা করতে ইসলামী মৌলবাদীরা উৎসাহিত হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে কলকাতায় গিয়ে কালীপূজার অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। এমন খবর চাউর হওয়ার পরই দেশজুড়ে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে কঠোর সমালোচনা শুরু হয়।
এ ঘটনার জন্য ‘মহসিন তালুকদার’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে সাকিবকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। হুমকি দেয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষমা চাইলেন সাকিব।
জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক জানান, অনেকেই বলছেন পূজা উদ্বোধন করেছি আমি। যেটি আমি কখনই করিনি। সচেতন মুসলিম হিসেবে আমি এটা করব না। তারপরও হয়তো ওখানে যাওয়াটাই আমার ঠিক হয়নি। সেটি যদি আপনারা মনে করে থাকেন তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও ক্ষমা প্রার্থী। আমি আশা করব আপনারা এটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এরকম কোনো ঘটনা যেন আগামীতে আর না ঘটে সেটিও আমি চেষ্টা করব।
