‘হিটলার খুব মিষ্টি ছিলেন’, সামনে এলো বৃটিশ বান্ধবীর ডায়েরি
অ্যাডলফ হিটলারের বৃটিশ বান্ধবী ইউনিটি মিটফোর্ডের একটি ডায়েরিকে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গত শতকের তিনের দশকে হিটলারের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল ইউনিটির। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত দুজনের মধ্যে ১৩৯ বার দেখা হয়েছিল। প্রথম দেখা থেকেই তিনি প্রেমে পড়ে যান হিটলারের। বলা হয়, বৃটিশ নাগরিকদের মধ্যে তার মতো করে কেউই হিটলারের এতটা কাছে আসতে পারেননি।
সম্প্রতি আবিষ্কৃত তার ডায়েরিটি বই আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। ডেইলি মেইল মোতাবেক, সেই ডায়েরির পাতায় পাতায় বর্ণনা রয়েছে হিটলারের সঙ্গে তার সম্পর্কের।
ইউনিটি জানিয়েছেন, হিটলারের ভালোবাসা পাওয়ার জন্য তিনি উন্মুখ ছিলেন। ডায়েরির পাতায় তাকে বারবার সেকথা লিখতে দেখা গিয়েছে। ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত পুরুষদের মধ্যে একজন হিসাবে যাকে বিবেচনা করা হয় সেই হিটলারকে তিনি “মিষ্টি” পুরুষ বলে অভিহিত করেছেন ।
নাৎসি ভক্ত ছিলেন ইউনিটি মিটফোর্ড। ডায়েরির পাতায় বর্ণনা লিখতে গিয়ে হিটলারকে বহুবার ‘তুমি’ বা ‘সে’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে। ১৯৩৩ সালে হিটলারকে প্রথমবার দেখার পর অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন মিটফোর্ড। তাকে ‘হিরো’ মনে করতেন। তার সঙ্গে হিটলারের প্রথমবার ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ হয় নুরেমবার্গের ব়্যালিতে। মিটফোর্ড এরপর জার্মানিতে বসবাস শুরু করেন। হিটলারের আরও কাছে আসার চেষ্টা করেন। সেক্ষেত্রে সফলও হন। তিনি হিটলারকে যতটা চিনতেন আর কোনও বৃটিশ নাগরিক ততটা চিনতেন না।
ডায়েরিটির নাম দেয়া হয়েছে ‘অ্যাডলফ হিটলারের ইংরেজ বান্ধবী’। সেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ববর্তী বছরগুলিতে তাদের সাক্ষাৎ এবং কথোপকথনের বিবরণ রয়েছে। ডায়েরির লেখাতে কর্তৃত্ববাদী হিটলার এবং তার শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে ভয়াবহ তথ্যও রয়েছে। হিটলারের একান্ত গোপনীয় তথ্যও পাওয়া গিয়েছে ডায়েরিতে।
এত বছর বাদে হারিয়ে যাওয়া সেই ডায়েরির প্রত্যাবর্তন নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। মনে করা হচ্ছে হিটলারের অত্যাচার ও ব্যক্তিগতভাবে তিনি কেমন মানুষ ছিলেন, সে সম্পর্কে নতুন করে আলো ফেলবে ইউনিটির এই দিনলিপি।
ডায়েরির পাতায় শেষ এন্ট্রি ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর। সেদিনই জার্মানি পোল্যান্ড দখল করে। দুদিন পরে যুদ্ধ ঘোষণা হয়ে যায়। হিটলারের ‘প্রেমিকা’ আবিষ্কার করেন, তার প্রিয় দেশ জার্মানি ও মাতৃভূমি ব্রিটেন পরস্পরের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত। এই আঘাত সইতে না পেরে নিজের মাথাতেই গুলি করেন ইউনিটি। কিন্তু আত্মহত্যার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তবে বাম মস্তিষ্ক ভয়ংকর জখম হয়। একটি বুলেট আটকে ছিল খুলির ভিতরে। তিনি ব্রিটেনে ফিরে আসেন। সেখানেই ১৯৪৮ সালে মৃত্যু হয় ইউনিটির। তখন তার বয়স মাত্র ৩৩।
সূত্র : হিন্দুস্থান টাইমস