রাহুলের ‘হিন্দু’ মন্তব্যের জেরে উত্তাল লোকসভা
বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ‘হিন্দু’ মন্তব্যের জেরে সোমবার উত্তাল হয়ে ওঠে ভারতের লোকসভা। এদিন রাষ্ট্রপতির প্রারম্ভিক ভাষণ নিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে প্রথমবার বক্তব্য রাখতে ওঠেন রাহুল। সাংসদদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা নিজেদের হিন্দু বলেন, তারা শুধু হিংসার কথা বলেন, ঘৃণার কথা এবং অসত্য কথা বলেন। তার পরই ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে হইচই শুরু হয়ে যায়।
বিজেপি সাংসদরা রাহুলকে এ নিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তোলেন। ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এমনকি রাহুলের বক্তব্যের মাঝেই নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, গোটা হিন্দু সম্প্রদায়কে হিংসাশ্রয়ী বলে দেগে দেওয়া খুবই বিপজ্জনক।
বিজেপিকে আক্রমণ করতে গিয়ে রামমন্দিরের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন রাহুল। তিনি বলেন, ফৈজাবাদের সপা সাংসদকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনি কখন বুঝতে পারলেন যে আপনি নির্বাচনে জিতছেন। উনি বলেন, শুরু থেকেই জানতেন তিনি জিতবেন। কারণ, বিজেপি রামমন্দিরের নামে মানুষের ঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তাদের ক্ষতিপূরণও দেয়নি। মন্দিরের নামে সেখানকার হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হয়েছে। রাম জন্মভূমিতে গরিবকে উচ্ছেদ করে বিমানবন্দর হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এর পরই রাহুল বলেন, এই দেশটা অহিংসার দেশ। এই দেশটা ভয় পাওয়ার দেশ নয়। আমাদের সব মহাপুরুষ অহিংসার কথা বলেছেন। ভয় দূর করার কথা বলেছেন। কাউকে ভয় দেখিও না, কাউকে ভয় পেও না। আর যে লোকেরা নিজেদের হিন্দু বলে, তারা ২৪ ঘণ্টা শুধু হিংসা করে, ঘৃণা ছড়ায়, অসত্য কথা বলে। আপনারা হিন্দুই নন। হিন্দু ধর্মে স্পষ্ট লেখা আছে যে, সত্যের পথে চলতে হবে। সত্যের থেকে দূরে সরে গেলে চলবে না। সত্যকে ভয় পেলে চলবে না। অহিংসা আমাদের প্রতীক।
রাহুলের এ কথার পরই শুরু হয় লোকসভায় হট্টগোল। এ নিয়ে রাহুলকে ক্ষমা চাইতে বলে অমিত শাহ বলেন, উনি (রাহুল) জানেন না, কোটি কোটি মানুষ নিজেকে গর্বভরে হিন্দু বলে থাকেন। কোনো ধর্মের সঙ্গে হিংসাকে জড়িয়ে দেওয়া ভুল। তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত। রাহুলকে আক্রমণ করতে গিয়ে কংগ্রেস আমলের জরুরি অবস্থা এবং শিখবিরোধী হিংসার প্রসঙ্গ তোলেন শাহ।
এবিসিবি/এমআই