Type to search

আন্তর্জাতিক

বিবাহবিচ্ছেদ প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর রাজনৈতিক জীবনে কতটা প্রভাব ফেলবে!

হঠাৎ করেই ১৮ বছরের বৈবাহিক জীবনের ইতি টানার ঘোষণা দিয়ে তুমুল আলোচনার জন্ম দেওয়া কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা তুঙ্গে। স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ারের সঙ্গে বিচ্ছেদের এই ধাক্কা কাটিয়ে তিনি চতুর্থবারের মতো কানাডার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে নামবেন কি না, তা নিয়ে কারো কারো মনে সংশয় তৈরি হয়েছে। ২০২৫ সালের অক্টোবরে কানাডার পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঐ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি তার দল লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব ঠিকঠাক মতো দিতে পারবেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠার যথেষ্ট কারণও রয়েছ। সম্প্রতি বিভিন্ন জনমত জরিপে সাধারণ কানাডীয়দের মধ্যে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়ার চিত্র ফুটে উঠেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এমনকি দলের ভেতরের লোকজনও তাকে নিয়ে তেমন আশাবাদী হতে পারছে না। এর মধ্যেই বুধবার স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন ট্রুডো। যারা শুধু দেশে নয়, বিশ্ব জুড়েই আদর্শ দম্পতি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এই বিচ্ছেদ যে ট্রুডোর ব্যক্তিগত জীবনে সবচেয়ে বড় সংকটগুলোর অন্যতম—সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এ ধাক্কা তিনি কাটিয়ে উঠতে চান বলেই জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠজন এবং রাজনীতি বিশ্লেষকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রুডোর ঘনিষ্ঠ একজন বলেন, তিনি আবারও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতায় নামবেন। বুধবার ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে ট্রুডো নিজেই সোফির সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে বলেন, সোফির সঙ্গে অনেক অর্থপূর্ণ ও কঠিন আলাপের মাধ্যমে তারা আলাদা হওয়ার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা একে অপরের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার মধ্য দিয়ে পারিবারিকভাবে এখনো ঘনিষ্ঠ রয়েছি। আমাদের মধ্যে সবকিছু একইভাবে টিকে থাকবে। এ সময় সন্তানদের মঙ্গলের জন্য এ বিষয়ে ‘গোপনীয়তা’ ধরে রাখার কথাও বলেন ট্রুডো।

আগামী সপ্তাহে তাদের সবার একসঙ্গে ছুটি কাটাতে যাওয়ার কথা রয়েছে। ৫১ বছরের ট্রুডো বরাবরই পরিবারের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। ২০১৫ সাল থেকে টানা তিন বার তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন এবং প্রতিটি নির্বাচনি প্রচারে সবসময় সোফি এবং এই দম্পতির তিন ছেলে-মেয়েকে একসঙ্গে দেখা গেছে। বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেওয়ার মাত্র এক সপ্তাহ আগে মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল করেন ট্রুডো। দুই বছরের বেশি সময় ধরে জীবনযাপন ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে কানাডার সাধারণ মানুষকে।

পোলিং ফার্ম নানোস রিসার্চের নিক নানোস বলেন, কানাডায় এখন গ্রীষ্মকাল চলছে। এ সময়ে কানাডীয়রা আনন্দ উদ্যাপন এবং বেড়ানো নিয়ে মেতে থাকে। এই সময়ে বিচ্ছেদের এই খবরে জনগণ খুব একটা মনোযোগ দেবে না। ট্রুডোর বাবা পিয়েরে ট্রুডোও লিবারাল পার্টি থেকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন এবং ট্রুডোর আগে তার বাবা পিয়েরে ট্রুডোই ছিলেন কানাডার একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি দায়িত্বরত অবস্থায় স্ত্রী মার্গারেটের সঙ্গে (যিনি ম্যাগি নামে অধিক পরিচিত ছিলেন) বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। ১৯৭৭ সালে বিচ্ছেদ হয় এবং ১৯৭৯ সালে কানাডার পার্লামেন্ট নির্বাচনে পিয়েরে ট্রুডোর দল হেরে যায়। বাবার মতো একই পথে চলা জাস্টিন ট্রুডোর ভাগ্যেও কি তবে একই ফল অপেক্ষা করছে?

এ বিষয়ে পোলিং ফার্ম ইকেওস এর প্রধান ফ্রাঙ্ক গ্রাভেস বলেন, ম্যাগির সঙ্গে পিয়েরের বিচ্ছেদ নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিকভাবে আলোচিত ঘটনা। তবে আমার মনে হয় না, বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে সেটির স্পষ্ট কোনো যোগাযোগ আছে বা তার হারের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পরিষ্কার কোনো সম্পর্ক ছিল।

এবিসিবি/এমআই

Translate »