যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়েই ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান চায় ইউরোপ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বাগিবতণ্ডার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে ইউরোপ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পরই যুক্তরাজ্যে যান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। সেখানে ব্রিটিশ প্রেসিডেন্ট কেইর স্টারমার ইউক্রেনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি জানিয়েছেন, ফ্রান্স ও ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা করে শান্তিচুক্তির পরিকল্পনা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে উপস্থাপন করা হবে।
এদিকে শনিবার যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ইউক্রেনপন্থিরা বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভের মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জেলেনস্কির সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণে খুশি রাশিয়া।
দেশটি বলেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তি চাইলেও ইউরোপ চায় না। শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ব্রেইটবার্ট নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালত্জ বলেন, ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলকে জানানো হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে।
এর ব্যাখ্যায় ওয়ালত্জ বলেন, ‘কীভাবে আপনি এসে এমন একজনকে অসম্মান করেন, যেখানে আপনি আসলে তাদের কাছে অর্থ ও সহায়তা ভিক্ষা করতে এসেছেন। তাই আমরা তাদের স্পষ্ট করে সবকিছু বলে দিয়েছি, এ আলোচনা যেটি তাদের ও তাদের দেশের জন্য দারুণ একটি দিন হতে পারত, সেটা শেষ হয়ে গেছে এবং চলে যাওয়ার সময় হয়েছে।’ এদিকে জেলেনস্কির সমালোচনা করে রুবিও বলেন, তিনি (জেলেনস্কি) নিজের আচরণ দিয়ে সবার সময় নষ্ট করেছেন।
এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যাতে আবার আলোচনায় বসেন, সেই চেষ্টা তিনি করবেন। দুজনের মধ্যে মধ্যস্থতা করবেন তিনি। গতকাল রবিবার স্টারমার আরো দাবি করেন, ইউক্রেনের সঙ্গে বসে যুদ্ধ থামাতে একটি শান্তিচুক্তি তৈরি করবে ফ্রান্স ও ব্রিটেন। পরে সেটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পাঠিয়ে সেই নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর সেখান থেকে ব্রিটেনে গিয়েছেন জেলেনস্কি। ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের সামনেই তাকে জড়িয়ে ধরেন স্টারমার। স্টারমার-জেলেনস্কি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ইউক্রেনকে প্রতিরক্ষা খাতে ২৮০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা) ঋণ দিয়েছে ব্রিটেন।
তারপরই রবিবার স্টারমার বিবিসিকে জানান, হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বাগ্যুদ্ধ দেখে ‘অস্বস্তি’ হয়েছিল তার। স্টারমারের কথায়, যুদ্ধ থামানোর জন্য ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং আরো দুই-একটি দেশ ইউক্রেনের সঙ্গে মিলে একটি পরিকল্পনা তৈরি করবে বলে স্থির হয়েছে। পরে সেই পরিকল্পনা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করা হবে। তবে ইউরোপীয় নেতারা জেলেনস্কির পাশে থাকার কথা বললেও ব্যতিক্রম স্লোভাকিয়া।
দেশটি বলেছে, তারা ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিকভাবে সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেবে। ইউক্রেন কখনোই সামরিক শক্তির অবস্থান থেকে আলোচনার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী নয় বলেও উল্লেখ করেছে দেশটি। পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, ন্যাটোর পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত আরো শক্তিশালী করা উচিত।
-বিবিসি