Type to search

Lead Story রাজনীতি

ভয় পেয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করছে সরকার

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ঘাবড়ে গেছে। আমাদের সমাবেশ দেখে তারা অস্থির। ঘাবড়ে গিয়ে ও ভয় পেয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করছে। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করছেন যে আন্দোলন দমন করার জন্য এই সরকার কীভাবে উলঙ্গভাবে নেমে পড়েছে। বাসমালিকদের দিয়ে গণপরিবহন বন্ধ করে দিচ্ছে। কেন, কারণটা কী? সমাবেশ যেন বড় না হয়। এ কোন মানসিকতা, সমাবেশ বড় না হওয়াতে তাদের লাভটা কী। তারা বলতে পারবে যে দেখো, বিএনপির সমাবেশ বড় হয়নি। এইভাবে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ। অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। ভালোই ভালোই সরে পড়ুন। নইলে দেশের জনগণ জানে কিভাবে সরাতে হয়।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সারাদেশে ধরপাকড়, মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার, জামিন বাতিল করে নেতা-কর্মীদের কারাগারে প্রেরণ, পুলিশি হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ঢাকায় এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের চলমান আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এই সরকারের গণবিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আমাদের আন্দোলন। সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন।’

তিনি বলেন, ‘সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। তারা মানুষের টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করছে। আর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বিদ্যুৎ আছে পাবেন। কিন্তু আমাদের তো চলে না। দিনে পাঁচ-ছয় বার লোডশেডিং হয়। মানুষ অতিষ্ঠ। দেশের কলকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কলকারখানা বন্ধ হলে লাখ লাখ কর্মী বেকার হবে। আজকে তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের অবসরে পাঠাচ্ছে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘যেখানেই বাধা সেখানেই সমাবেশ। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা হবে সমাবেশের শহর। শেখ হাসিনা কতো বাধা দেবেন? শেখ হাসিনার দিন শেষ। আর এক মুহূর্তও এই সরকারকে কেউ দেখতে চায় না। আমাদের দাবি এখন একটাই সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ। পুলিশ ও প্রশাসনকে বলবো আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন কারণ শেখ হাসিনা আর নেই। শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না এবং হতে দেওয়া হবে না।’ তিনি অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস সালাম বলেন, ‘খেলা শুরু হয়ে গেছে। আর আওয়ামী লীগ হাবুডুবু খাচ্ছে।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে,দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভুইয়া, জয়নুল আবদীন ফারুক, মীর সরফত আলী সপু, নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদলের আলহাজ সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও আবদুল মোনায়েম মুন্না, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল,তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ,ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

এর আগে দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন ঢাকা মহানগরীর থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। কয়েক হাজার নেতা-কর্মী সমাবেশে জড়ো হওয়ায় ফকিরাপুল মোড় থেকে কাকরাইলের নাইটিংগেল মোড় পর্যন্ত সড়কের দক্ষিণ দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিলো।

‘মৃত্যুকূপে ধাবমান বাংলাদেশ’ স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন

দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘মৃত্যুকূপে ধাবমান বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।

সাম্প্রতিক আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুর রহিম, ছাত্রদলের নুরে আলম, যুবদলের শহীদুল ইসলাম শাও ও রাজা আহমেদ শাওনের স্মরণে জিয়া পরিষদ ‘মৃত্যুকূপে ধাবমান বাংলাদেশ’ নামের এই স্মরণিকা প্রকাশ করে।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আবদুর রহিমের স্ত্রী খাদিজা বেগম, নুরে আলমের স্ত্রী ইফফাত জাহান, শহীদুল ইসলাম শাওনের পিতা ছোয়াব আলী ভূঁইয়া ও রাজা আহমেদ শাওনের মা আমেনা বেগমকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

জিয়া পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন-জিয়া পরিষদের মহাসচিব এমতাজ হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি দেওয়ার মাহফুজুর রহমান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

নিহত কর্মীদের স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আর না। এখন সময় এসে গেছে যার যা শক্তি আছে সেটি দিয়ে সমস্ত দেশের মানুষকে জাগিয়ে তোলা। আজকে জিয়া পরিষদের দায়িত্ব হবে এ গণজাগরণের কাজটি করা।-ইত্তেফাক

এবিসিবি/এমআই

Translate »