পঞ্চগড়ে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষঃ বিএনপি নেতা নিহত, পুলিশসহ আহত অর্ধশতাধিক

জেলা প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পঞ্চগড় জেলা শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে বিএনপির ১ নেতার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশসহ নেতাকর্মী আহত হন অর্ধশতাধিক। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরের পর পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
মৃত্যু বিএনপি নেতার নাম আব্দুর রশিদ আরেফিন (৫০)। তার বাড়ি জেলার বোদা উপজেল্রা ময়দানদিঘী ইউনিয়নের হরিপুর এলাকায়। সে ওই এলাকার খোরশেদ মুহুরীর ছেলে। ময়দানদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক এবং বর্তমানে ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন তিনি। বর্তমানে তার মরদেহ পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
পুলিশ-বিএনপি নেতাকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১০ দফা দাবিতে পঞ্চগড়ে বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু করার আগেই মিছিলে বাঁধা দেয় পুলিশ। বাঁধা মেনে মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপসহ লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ১ থেকে দেড় ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিএনপি নেতা-কর্মীরাও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় লোকজন দোকানপাট বন্ধ করে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে। বিকেল ৬টা পর্যন্ত শহরের প্রধান সড়ক ও দোকানপাট বন্ধ ছিলো। সাইকেল, রিকশাভ্যান চললেও অন্য কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।পুলিশের লাঠির আঘাতে ময়দানদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রশিদ আরেফিন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান বাবুসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়। নেতা-কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে জেলার আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. তৌফিক আহামেদ আব্দুর রশিদ আরেফিন নামে এক ব্যক্তির লাশ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান। তবে কীভাবে বা কি কারণে তিনি মারা গেছেন তা ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না।
যেহেতু পুলিশের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে এবং রাস্তায় ভাংচুর করা হয়েছে। এ সময় পুলিশ জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। এতে তাদের মধ্যে ২০/২৫ জন এবং পুলিশের ১০/১২ জন আহত হয়। আব্দুর রশিদ আরেফিন নামে যে ব্যক্তি মারা গেছেন তিনি বাইপাস রোগী। তিনি হৃদরোগজনিত কারণে মারা গেছেন তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহৃ ছিলো না। আগামীকাল তার ময়নাতদন্ত করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিয়া নিহতের খবর নিশ্চিত করেন। কিন্তু পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছেন নাকি সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন সেটা বলতে পারেননি।
তিনি আরো বলেন, কেউ আটক আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জানান, আটক আপাতত কেউ নেই। পুলিশের ওপর আক্রমণ, সরকারি কাজে বাধা, সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এবিসিবি/এমআই