দলীয় সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না বললেন মির্জা ফখরুল

মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকলে তার নির্দেশের বাইরে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। দলীয় সরকারের অধীনে কখনোই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এই নির্বাচন কমিশন নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যা করেছে সেটিকে নির্বাচনী গণতন্ত্র বলা যায় না। তারা ভোট ডাকাতির নির্বাচনকে গণতন্ত্র নাম দেওয়ার চেষ্টা করছে। গণতন্ত্রের মুখোশ পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাটাকে ধরে রাখে। যাকে হাইব্রিড রেজিম বলে। এই হাইব্রিড রেজিমের ফলে জনগণ তার ভোটাধিকার থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন- নির্বাচন কমিশনের কোনো অধিকারই নেই, সম্ভব না। সরকারের নির্দেশ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারই নেই যে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সকালে নির্বাচন কমিশনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আ্উয়াল জানান, ২০১৮ সালের মতো নয়, আইন অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সংসদ নির্বাচন হবে সময়মতো। বর্তমান কমিশন প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে এসেছে, ডিগবাজী নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের সম্পদ লুট করে নিজেদের সম্পদ বৃদ্ধি করা এবং বিদেশে সেই সম্পদ পাচার করাটাই হচ্ছে এই সরকারের একমাত্র নীতি। তাদের মতো করে আরো অনেক দেশের স্বৈরাচারী শাসক কিংবা হাইব্রিড রেজিমের শাসকেরা এই ধরনের নীতি অনুসরণ করে দেশের সম্পদ লুট করার নজির আছে। অতি সম্প্রতি শ্রীলংকাতে সেইরকম ঘটনা ঘটেছে। জনগণ রাস্তায় বেরিয়ে এসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দিতে বাধ্য করেছে। একইভাবে নাইজেরিয়া ও ভেনেজুয়েলাতে একই অবস্থা আমরা দেখেছি।
তিনি বলেন, বিবিএস প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গত মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৩৫৬ শতাংশে। যা নয় বৎসরে সর্বোচ্চ, আইএডপিআরআই এর হিসাব অনুযায়ী একেবারে নতুন করে ৫০ লাখ মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে পতিত হচ্ছে। এটা দারিদ্র সীমার নীচে বাসকারী শতকরা ৪২ ভাগের অতিরিক্ত।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের যখন উদ্দেশ্যই হয় জনগণের সম্পদ লুট করা তখন সেই অর্থনীতি টেকসই হয় না। সেকারণে আয়-বৈষ্যম বাড়তে থাকে। আজকে আমাদের দেশে এক শ্রেণীর মানুষ অনেক বড় লোক হয়ে গেছে, তাদের সম্পদ পাহাড়ের মতো হয়েছে, আরেক শ্রেণীর মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়েছে- এই শ্রেণীর মানুষের সংখ্যা বেশি। ফলে অতি দ্রুত এই অর্থনীতি ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি রয়েছে।
এবিসিবি/এমআই