ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে একমত হেফাজত

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দাবির সঙ্গে একমত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। শনিবার (৫ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির সঙ্গে এক বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা ।
বৈঠক শেষে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অতি দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেবেন, সে বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে একমত হয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমরা যেমন সংস্কার চাই, বিচার চাই; কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের বিষয়টি সর্বাগ্রে বিবেচনা করতে চাই। ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছিলেন । কিন্তু প্রায় কিছুদিন পরপর দেখা যাচ্ছে ডিসেম্বর থেকে জুনে, জুনে থেকে ডিসেম্বরে—এ রকম কথা বলতে দেখা যাচ্ছে ।
বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাত ৮টা থেকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় এ বৈঠক হয়। এতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিচার ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের বিষয়েও একমত পোষণ করেন বিএনপি ও হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ছিলেন। অন্যদিকে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমানের নেতৃত্বে ছিলেন – ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী প্রমুখ।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের আলেম-উলামাদের বিরুদ্ধে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সরকারের কাছে আহ্বান জানাব তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসাবে বিচারের আওতায় আনার জন্য হেফাজতে ইসলামের নেতাদের দাবি আছে। যে দাবি আমরা প্রকাশ্যে করেছি, লিখিত ভাবে করেছি; সরকারকে জানিয়েছি, জনগণের কাছে তুলে ধরেছি। তারা সেই দাবি আমাদের কাছে পুনরায় জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মামলা দায়ের করা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রী-এমপি ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে সেই মামলাগুলোর এখনো কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি আমাদের সামনে নেই। সমগ্র জাতি প্রত্যাশা করে এই মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। সেজন্য আমরা প্রস্তাব করছি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হোক। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট বৃদ্ধি করা হোক। প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত টিম এবং অন্যান্য সাপোর্ট বৃদ্ধি করা হোক । প্রয়োজনে বিভাগীয় পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা যায় কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে ।
-ইত্তেফাক