কোভিড-১৯: কঠোর লকডাউনের খরবে ঢাকা ছাড়ছে সাধারণ মানুষ

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) বিস্তার ঠেকাতে ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউনের’ খবরে অনেকে ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু দূরপাল্লার বাস চলাচল না করায় হেঁটে, পিকআপে, মোটরসাইকেল বা বিভিন্ন ছোট বাহনে তাদের করে যেতে হচ্ছে। আর এ জন্য বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
রাজধানীর ভেতরে পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা থাকার ফলে যানবাহনগুলো সরকারি আদেশ মেনে চললেও ঢাকার বাইরে চিত্র ভিন্ন। সরকারের নির্দেশে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর পরও গণপরিবহনে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। মহানগরে গণপরিবহন চলাচল করার কথা থাকলেও কিছু চালক বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন অধিক ভাড়ায়।
যশোর যাত্রী তায়েব হোসেন জানিয়েছেন, ঢাকার একটি ছোট দোকানে তিনি কাজ করেন। লকডাউনের কথা শুনে আগেই গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন তিনি। কারণ ঐ সময় বেচা-বিক্রি হবে না এবং দোকান বন্ধ রাখতে হবে। আবার ঢাকায় থেকে চালাতে পারবেন না খরচও। কিন্তু যেখানে ৫০০ টাকায় বাসে যেতেন, সেখানে মাইক্রোবাসে ৯০০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত ভাড়া গুনেই ঢাকা ছাড়ছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরার আব্দুল্লাহপুর, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড ও যাত্রাবাড়ী, গাবতলী এলাকায় ভাড়ায় প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাসগুলো বিভিন্ন জেলায় অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে। সাইনবোর্ড থেকে চট্টগ্রাম ফেনী, সিলেট, নোয়াখালী, কুমিল্লা,নভৈরব-কিশোরগঞ্জ যাত্রী পরিবহন করছে ঐ সব গাড়ি। যেখানে আন্তঃজেলা বাসগুলোর ভাড়া ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, সেখানে এসব গাড়ি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় জনপ্রতি বাড়তি ভাড়া আদায় করছে।
গতকাল রবিবার দুপুরের পর রাজধানীর আব্দুল্লাহপুরে গাড়িতে তল্লাশি চালায় ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। আবদুল্লাহপুর এলাকায় তল্লাশির সময় গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করায় ৪টি মাইক্রোবাস ও ২টি বাস আটক করা হয়। কর্মরত ট্রাফিক সার্জেন্ট কিছু সময় গাড়িগুলোকে আটকে রেখে ছেড়ে দেন।
তবে এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা-পূর্ব জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) কাজী হানিফুল ইসলাম বলেছেন, ট্রাফিকের কোনো কর্মকর্তার অনিয়ম-দুর্নীতি ছাড় দেওয়া হবে না। গণপরিবহনে গাদাগাদি করে যাত্রী নেওয়ার বিষয়েও থাকবে অভিযান অব্যাহত।
এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিটাগাং রোড এলাকায় দেখা গেছে, নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বাস ও লেগুনাগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে মানুষ ধাক্কাধাক্কি করে উঠছেন। দ্বিতীয় দফায় করোনার সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। কিন্তু সেটি মানছে না সাধারণ মানুষ।