ফেসবুকে ‘আল বিদা’ লিখে ঢাবি শিক্ষার্থী ইমাম হোসাইনের আত্মহত্যা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আই.ই.আর) শিক্ষার্থী ইমাম হোসাইন আত্মহত্যা করেছেন।তিনি সোমবার (১৭ আগস্ট) সকালে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এবং থাকতেন কবি জসীমউদ্দীন হলে। তার বাড়ি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গাজীপার এলাকায়। ৩ ভাই ও এক বোনের মধ্যে ইমাম ছিলেন সবার ছোট।
পুলিশ জানায়, আত্মহত্যা করার আগের দিন ইমাম হোসাইন ফেসবুকে ‘আল বিদা’ (বিদায়) লিখে একটি পোস্ট করেন।
উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান ইমামের আত্মহত্যার কথা সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওই শিক্ষার্থী বেশ কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। তার মানসিক বিপর্যয় প্রেম সংক্রান্ত কারণে বলে তিনি জানান।
নিহত ইমামের বড়ভাই আরিফুল ইসলাম জানান, তার ভাই ইমামের আচরণ অস্বাভাবিক ছিল। লকডাউনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে খারাপের কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল সে। তিনি জানান, গতকাল সোমবার মাগরিবের নামাজের পর ইমামের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
ইমাম হোসেনের একাধিক বন্ধুর কাছ থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে তিনি হতাশায় ভুগছিলেন। কি কারণে তিনি হতাশায় ছিলেন তা জানতে চাইলে তারা জানান, প্রেমঘটিত কারণ হতে পারে। মেয়েটি আগের মতো তার সাথে সম্পর্ক রাখতো না। এই কারণে ইমামের মাঝে হতাশা চলে এসেছিল। প্রতিদিন তার নিকট কিছু স্থানীয় শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়তে আসতো। সোমবার (১৭ আগস্ট) সকালে তারা এলে ইমাম বলেন, ‘তোমাদের তো অনেক দিন ধরে কোন ছুটি দিচ্ছি না। একটু রেস্ট নেওয়া প্রয়োজন। তোমরা আগামী ২ দিন আসিও না।’ এ কথা বলার পর তারা চলে যায় এবং ইমাম হোসাইন বাড়ির ভিতরে চলে যান। এরপর তার মরদেহ উদ্ধার হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল মালেক জানান, ‘বিষয়টি ১ জনের কাছে শুনেছি। তবে কোন শুভাকাঙ্খী, আত্মীয় আমাকে ঘটনার ব্যাপারে কোন তথ্য দেয়নি। তাই এ ঘটনা সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানি না। খোঁজ-খবর নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি বলে জানান তিনি।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী জানান, ‘বিষয়টি সম্পর্কে শুনেছি। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছি। সত্যি যদি হয়ে থাকে, তাহলে এটি মর্মান্তিক এবং বেদনাদায়ক ঘটনা। এখন বেঁচে থাকার সময় আমাদের মেধাবী ছাত্রদের। এটি সত্যিই অনেক দুঃখজনক ঘটনা।