‘আইনের চোখে নারী পুরুষ সকলে সমান’

বাম থেকে নায়িকা পরীমনি, পিয়াসা, মৌ, হেলেনা জাহাঙ্গীর । ফাইল ফটো
স্বপ্না গুলশান:
পরীমনি, পিয়াসা, হেলেনা জাহাংগীরসহ. অভিনেত্রী-মডেলদের বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। বিবৃতিতে বরাবরের মতো বলা হয়েছে, উনারা নারী । উনাদের যেন হয়রানি না করা হয়। উনাদের যারা এ পথে এনেছেন তাদের মুখোশ উন্মোচন করুন । নারীর প্রতি সহনশীল হোন ইত্যাদি । সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত প্রতিবেদনে উনাদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে মহিলা পরিষদ ।
নায়িকা পরীমনী, মডেল পিয়াসা, মৌ, হেলেনা জাহাংগীরের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব পুলিশ আটক করেছে। তারা এখন রিমান্ডে আছেন । আদালতে দোষী প্রমানিত হলে অপরাধ অনুযায়ী দেশের আইনে যে শাস্তির বিধান আছে সেটিই পাবেন তারা। আর যদি নির্দোষ হন তবে মুক্তি পাবেন ।পুলিশ র্যাব ডিবি সিআইডি কে তাদের দায়িত্ব পালন করতে দিন।
হুটহাট করে নারীর প্রতি সহনশীল হোন এধরনের বিবৃতি দিয়ে গোটা নারী সমাজকে খাটো করবেননা। আমাদের নারীরা দেশে বিদেশে মেধা যোগ্যতা দিয়ে অনেক সুনাম অর্জন করেছেন। গুটি কয়েক বখে যাওয়া, অতি লোভী, ধান্দাবাজ দুর্নীতিবাজ, অপরাধজগতে জডিয়ে পড়া নারীদের জন্য গোটা নারী সমাজের দুর্নাম কেন হবে? যার অপরাধের দ্বায়ভার তাকে নিতে দিন । এসব হাতে গোনা কিছু অর্থপিপাসু নারী গোটা দেশ জাতির জন্য ভয়ংকর। এরা অর্থের লোভে মাফিয়া গডফাদারদের সাথে মিলে নৈরাজ্যের পাহাড় গড়ে তুলেছে। এদের খপ্পরে পড়ে যুবসমাজের অনেকেই বিপথগামী হয়েছেন । পুলিশ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে ক্ষমতাধর রাজনীতিবীদ ও এদের খপ্পরে পড়ে নাকানিচুবানী খাচ্ছেন ।
উচ্চাভিলাষী জীবন আর রাতারাতি ধনী হবার বাসনা এত নীচে নামিয়েছে এদের । প্রশাসন ও সমাজের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের পিছনে অর্থের বিনিময়ে এসব নায়িকা ও মডেলদের লেলিয়ে দিয়ে মাফিয়া গডফাদাররা অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে ।
ইতিহাসে বেগম রোকেয়ার মতো বহু মহীয়সী নারীর কথা বলা হয়েছে। আবার সেই নারীর অতি রুপ সৌন্দর্য, লোভ , হীন ষড়যন্ত্র, নোংরামী নষ্টামীর কারনে বহু দেশ, জাতি , সভ্যতার ধ্বংসের বিষয়টি ও আমরা জানি ।
যাহোক, অনেকে আবাব নায়িকা পরীমনি কে বাপ মা হারা অভিভাবকহীন উল্লেখ করে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন । ১৮ বছর হবার পরে কি কেউ বাচ্চা মেয়ে আর অভিভাবকহীন থাকে ? উনার বয়স তো শুনলাম ২৯ / ৩০ বছর। র্যাবের অভিযান চলাকালে ফেসবুক লাইভে এসে নানুভাই নানুভাই বাডীতে আছে বলে তিনি চীৎকার করছিলেন ! তো এই নানুভাই তো উনার সবচেয়ে বড় অভিভাবক হবার কথা। সুন্দরী নায়িকা, মডেল হলেই কি এসব করতে হবে? সাতখুন মাফ? দেশে তো আরো অনেক সুন্দরী নায়িকা ও মডেল রয়েছে !
আমরা যেসব নারী বিশেষত নারী সাংবাদিক ইউরোপ, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়াতে নাগরিকত্ব নিয়ে বসবাস করছি তারা চাইলেই রাতারাতি ধনী হবার স্বপ্ন দেখতে পারে কিন্ত সে অবৈধ পথে কখনো পা বাড়ান না। কারন তাদের মধ্যে পারিবারিক শিক্ষা, নীতি নৈতিকতা আছে। বহু কষ্ট করে মেধা দিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে এদেশে আমরা বসবাস করি। ইদানীং বাংলাদেশের অনেক নারী সাংবাদিক ও অন্যান্য পেশার নারীদেরকে দেখছি নানা কারনে নিজেদের পেশাতে টিকতে না পেরে অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা করছে, খাবার সাপ্লাই দিচ্ছে । মেধা যোগ্যতা দিয়ে যা পারেন সৎভাবে জীবন যাপন করার আপ্রান চেষ্টা করছেন । এসব নারীরা আমাদের জন্য অবশ্যই গর্বের বিষয় ।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধান মন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুজনেই নারী। রাজনৈতিকজীবনের নানা চড়াই উৎরাই পেরুতে গিয়ে নানাকারনে জেল খেটেছেন দুজনই । বড় দুটো রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে ক্ষমতাশীল ব্যক্তি হয়ে ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সবকিছু মোকাবিলা করেছেন। নারী হিসেবে বিশেষ কোন সহানুভুতি তাঁরা পাননি এবং এমনটি আশা ও করেননি তাঁরা।
সামর্থ্যের বাইরে উচ্চাভিলাষী জীবন যাপনের বাসনা আর রাতারাতি কোটিপতি হবার স্বপ্নে বিভোর হয়ে কিছু কিছু উঠতি নায়িকা , মডেল ও তথাকথিত রাজনৈতিক দলের অনেক নেত্রী বিভিন্নভাবে অপরাধ জগতে জডিয়ে পড়েছেন ।