Type to search

Lead Story সারাদেশ

সিলেট-সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতি

এক মাসের ব্যবধানে আবারও ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। বাংলাদেশে ভারি বর্ষণ ও ভারতের কিছু অংশে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ঢলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, হবিগঞ্জ, নীলফামারী, নেত্রকোনা, গাইবান্ধাসহ কয়েকটি জেলা প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে বন্যা ভয়াল রূপ নিয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জে। সুনামগঞ্জের বন্যাকে মহাদুর্যোগ বলে মন্তব্য করেছেন ১ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে যাওয়ায় এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জের ১৬ উপজেলাসহ অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে লাখ লাখ জনগণ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে অতি প্রয়োজনীয় মোবাইল ফোনও বন্ধ হয়ে গেছে। উদ্ধার তৎপরতায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী। বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বসতঘর তলিয়ে যাওয়ায় অনেকে ঘরবাড়ির ওপরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে রান্নাবান্নার সুযোগও পাচ্ছেন না। নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় পানীয় জলের অভাব তীব্র আকার ধারণ করেছে। কয়েকটি উপজেলার অনেক এলাকা বিচ্ছিন্ন বাড়িঘরে অনেকে অভুক্ত অবস্থায় রয়েছেন।সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ এবং শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। উপদ্রুত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। অচল হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। এতে দরিদ্র মানুষ সীমাহীন কষ্টে পড়েছেন। বিদ্যুৎ, সুপেয় খাবার পানি ও খাদ্য সংকটে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে।

সিলেটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, ‘পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নদীর পানি ক্রমেই বাড়ছে। ফলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।’ গত ৩ দিনে উজানে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে; যা পাহাড়ি ঢল হয়ে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন নদনদী উপচে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিত সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া উজানে ভারতের অংশে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদনদীর পানি বাড়ছে।

সুনামগঞ্জের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় দূরের স্বজনরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, সুনামগঞ্জবাসী মহাদুর্যোগ মোকাবিলা করছেন, এর আগে কখনোই এমন ভয়াবহ বন্যা এই জেলায় হয়নি। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই যোগাযোগের জন্য ফোনেরও কোনো নেটওয়ার্ক নেই। অনেক চেষ্টা করে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে পরিস্থিতির খবর দিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানো হয়েছে।

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শহর ও গ্রামের বহু ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও মন্দির। প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা তাদের গবাদি পশু নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। নিচু এলাকায় হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর ফেলে জীবন বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।

এবিসিবি/এমআই

Translate »