Type to search

সারাদেশ

সাতক্ষীরায় জোয়ারের পানিতে ৫০টি গ্রাম প্লাবিত, ব্যাপক খয়-ক্ষতির আশঙ্কা

জেলা প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় পাউবো বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ছে। এ প্লাবিত গ্রামের ওপর দিয়ে প্রবল বেগে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এসব এলাকায় অসংখ্যক চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে। ধসে পড়েছে কয়েক হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি। দুর্যোগ কবলিত অসহায় মানুষ গুলো আতংকিত ও  জান- মালের চরম নিরাপত্তাহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘুর্ণিঝড় আম্পানে বেড়িবাঁধের যেসব এলাকা ধসে পড়েছিল সেসব স্থান গত কয়েকমাসও সংস্কার সম্ভব হয়নি। ঘুর্ণিঝড় আম্পানে ধসেপড়া বাঁধের ওইসব এলাকা দিয়ে গত ৩দিন ধরে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। নদীতে জোয়ারের পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় কারণে অনেক স্থানে বাঁধ ভাঙ্গনে গ্রামের দিকে পানি প্রবল বেগে প্রবেশ করছে।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলায থেমে থেমে দমকা হাওয়া ও জোয়ারের পানির চাপে অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামজুড়ে থাকা ৩ শতাধিক চিংড়ি ঘের পানিতে ভেসে গেছে। হাজার হাজার বসত বাড়িও প্লাবনের মুখে পড়েছে।

শ্যামনগরের সুন্দরবন উপকূলবর্তী গাবুরা ইউ পি চেয়ারম্যান জি এম মাসুদুল আলম বলেন, আমার ইউনিয়নের নেবুবুনিয়ায় গত ২০ মে ঘুর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু গত বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দিনভর ভারি বৃষ্টি ও জোয়ারের চাপে তা ভেঙে খোলপেটুয়া নদীর পানিতে ভেসে গেছে গাবুরা, নেবুবনিয়াসহ ৫টি গ্রাম। এতে সংলগ্ন এলাকার চিংড়ি ঘের ও বসত বাড়ি ছাড়াও ফসলেরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আশাশুনি শ্রীউলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল বলেন, নদীর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি হওয়ায় নতুন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। নদীতে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। এ ইউনিয়নের ২২ গ্রাম, মসজিদ, মাদ্রাসা, খেলার মাঠ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বসতবাড়িসহ ফসলের জমি, হাট-বাজার সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সবই এখন পানির নিচে। ইউনিয়নের হাজরাখালিতে গত ২০ মে’র পর থেকে বেড়িবাঁধ রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা করা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, পরিবেশ প্রতিকুলতার কারণে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাঁধ নির্মাণের কাজে নানান সমস্যার কারণে ফিরে গেছেন। তারা শীত মৌসুমে বাঁধ নির্মাণের জন্য আবার আসবেন বলে জানিয়েছেন। গত ২ দিনে নদীর পানির চাপ বাড়ার ফলে ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। ২ দিন ধরে নেই বিদুৎসংযোগ। অনেক পরিবারের সদস্যরা না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে।

প্রতাপনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্পানের পর থেকে ১৭টি গ্রামের মানুষ এখনও বাড়িতে ফিরে যেতে পারেনি। নদীর জোয়ারের পানি বৃদ্ধির ফলে এসব গ্রামে পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ৩ দিন নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ার, সেই সাথে দমকা হাওয়াও বইছে। দুর্গত এলাকায় কবর দেওয়ারও জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ১ ও ২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের ও সুধাংশু সরকার বলেন, এখন নদীতে তীব্র জোয়ার। নদীর জোয়ারের পানি প্রায় ৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে নয়। আবহাওয়া অনুকূলে না আসা পর্যন্ত সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না।

Translate »