‘সাকিবের বিচার এই দেশের মাটিতেই হবে’

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বর্তমান খেলোয়াড় ও সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিএনপির ক্রীড়া-বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক।
তিনি বলেছেন, সাকিব গত ১৭ বছরের স্বৈরাচার সরকারের একজন এমপি হিসেবে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। নিজের সুবিধার জন্য তিনি অবৈধ সংসদে যোগ দিয়েছেন।
সম্প্রতি এক রাজনৈতিক সভায় দেওয়া আমিনুল হকের এমন বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। তার মতে, একজন খেলোয়াড়ের দায়িত্ব হলো দেশের জন্য খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা বজায় রাখা, কিন্তু সাকিব তার ব্যক্তিগত স্বার্থে রাজনৈতিকভাবে আপস করেছেন। যার জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে ফেরেননি সাকিব। এরপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সঙ্গেই থাকছেন তিনি। সাকিবকে দেশে আসতে দেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নে আমিনুল আরও বলেন, ‘এ ধরনের একজন খেলোয়াড়কে দেশে আসতে দেওয়া হবে কি না, সেটা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত। তবে আমার প্রশ্ন হচ্ছে—স্বৈরাচার সরকারের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের অবশ্যই বাংলাদেশের মাটিতে বিচার হবে, ইনশাআল্লাহ।’
২০২৪ সালে জাতীয় নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তবে তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়ে দেশের ক্রীড়া ও রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক চলমান রয়েছে। বিশেষ করে, সাকিবের মতো একজন আন্তর্জাতিক তারকার রাজনীতিতে সরাসরি অংশগ্রহণের ফলে ক্রীড়া ও রাজনীতির সীমারেখা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তবে আমিনুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাকিবের আল হাসানের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে এই বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন এবং একজন জাতীয় গৌরবের খেলোয়াড়কে এভাবে হেয় করার চেষ্টা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের বাইরে বলে অভিহিত করেছেন।
জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিএনপির ক্রীড়া-বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক
কেউ কেউ আমিনুল হকের বক্তব্যকে ‘হীন রাজনৈতিক কৌশল’ বলে আখ্যা দিয়েছেন, আবার কেউ কেউ সাকিবের রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে খোলামেলা বিতর্কের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছেন। এই বক্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়বে কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ক্রীড়া ও রাজনীতির দ্বৈত ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশে বিতর্ক আরও যে গভীর হচ্ছে, সেটা আর না বললেও চলে।
-ইত্তেফাক