Type to search

রাজনীতি

শেখ হাসিনাকে রেখেই এগোবে ভারত

আজকের পত্রিকা

‘হাসিনাকে রেখেই এগোবে ভারত’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে থাকছেন, এটি মেনে নিয়েই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্নির্মাণ করতে চায় দেশটি। ভারত মনে করে, দেশটিতে শেখ হাসিনার অবস্থান সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার পথে প্রভাব ফেলবে না। গতকাল সোমবার ঢাকা সফরে আসা ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি এমন বার্তা দিলেন বাংলাদেশকে।

বিক্রম মিশ্রি একই সঙ্গে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে তাঁর সরকারের উদ্বেগের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। অবশ্য এ বিষয়ে বাংলাদেশ থেকে পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি এ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে অন্য দেশের কথা বলাটা সরকার গ্রহণ করছে না।

দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বার্ষিক পরামর্শমূলক সভায় (এফওসি) যোগ দিতে বিক্রম মিশ্রি গতকাল ঢাকায় আসেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এটি দেশটির কোনো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার প্রথম বাংলাদেশ সফর। দিল্লি থেকে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া, ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী প্রচার, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা, দুই দেশের ভিসা কমিয়ে দেওয়াসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অস্থিরতার মধ্যে সফরটি অনুষ্ঠিত হয়।

এফওসিতে অংশ নেওয়া ছাড়াও বিক্রম মিশ্রি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সব বৈঠকেই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অস্থিরতা কাটানোর ওপর জোর দেয় বাংলাদেশ ও ভারত। তবে সরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের মন্তব্য করা, সীমান্ত হত্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতভেদ কমেনি।

বিক্রম মিশ্রি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন যমুনায় সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তাঁদের মধ্যে কী কথা হয়েছে, সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়।

বিক্রমকে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কে কিছু মেঘ জমে ছায়া তৈরি করেছে। এই ‘কালো মেঘ’ মুছে ফেলতে
ভারতের সাহায্য প্রয়োজন।

ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের লোকজন উদ্বিগ্ন। কারণ, তিনি সেখান থেকে অনেক বক্তব্য দিচ্ছেন। এটা উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।’

ইউনূস বন্যা এবং পানি ব্যবস্থাপনায় ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা এবং দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য তাঁর উদ্যোগে ভারতকে সাড়া দেওয়ার আহ্বান জানান।

বিক্রম মিশ্রি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদারে সম্মিলিত ও সমন্বিত চেষ্টায় ভারতের আগ্রহের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এমনটি উল্লেখ করে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘সম্পর্ক বাড়ানো ছাড়া দ্বিতীয় কোনো চিন্তা নেই। আমরা এটিকে উভয় দেশের জন্যই লাভজনক হিসেবে দেখি। …আমরা যেখানে ছিলাম, সেখান থেকেই আবার শুরু করতে চাই।’

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে গণমাধ্যমের বর্ণনা এবং ভারত সরকারের ধারণা ভিন্ন, এমনটি দাবি করে বিক্রম মিশ্রি বলেন, ভারত সরকার ইউনূসের সরকারের সাফল্য কামনা করে।

বাংলাদেশের একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক রয়েছে, এটি ‘ভুল ধারণা’ উল্লেখ করে বিক্রম বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোনো নির্দিষ্ট দলের জন্য নয়; বরং সবার জন্য।

তারাই ছিলেন। সংকট দেখিয়ে সরকারকে চাপে ফেলে একদিকে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছেন, অন্যদিকে এই ক’দিন নানা অপকৌশলে ক্রেতার পকেটে ছুরি চালিয়ে টাকা লুটেছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা স্রেফ দিনদুপুরে ডাকাতি ছাড়া আর কিছু নয়। প্রকৃতপক্ষে তেলের কোনো সংকটই ছিল না। ফন্দি এঁটে কয়েক দিন ক্রেতার নাভিশ্বাস তুলে সরকারকে জিম্মি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছে। অতীতেও ঘটেছে এমন ঘটনা। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এমন কাণ্ড অপ্রত্যাশিত। প্রশ্ন উঠেছে, এ সরকারও কি সিন্ডিকেটের কাছে পরাস্ত?

ভোক্তার দাবি, আজ তেল, কাল চিনি, পরশু হয়তো অন্য কোনো পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সুবিধা নেবে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। তাতে একদিকে ভোক্তার খরচ বাড়বে, অন্যদিকে সরকারও পড়বে চাপে। তাই এখন যেসব তেলের বোতল বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে, সেগুলো কখন আমদানি করা হয়েছে, আমদানি দর কত ছিল, কবে নাগাদ বাজারজাত করা হয়েছে– এসব তথ্য খতিয়ে দেখতে হবে। একই সঙ্গে বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি করতে ছোট ব্যবসায়ীর জন্য সৃষ্টি করতে হবে আমদানির সুযোগ।

বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৮ টাকা বাড়ানোর ঘোষণার পরপরই রাজধানীর বিভিন্ন দোকানে ভরে গেছে তীর, ফ্রেশ, পুষ্টি, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল। কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটসহ কয়েকটি বাজারে গতকাল রাতে পাঁচ লিটারের বোতলজাত তেল ৮৪০ থেকে ৮৫০ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। তবে ওইসব বোতলে দাম লেখা ৮১৮ টাকা।

বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বাড়ানো ও দাম স্বাভাবিক রাখতে অন্তর্বর্তী সরকার গত ১৭ অক্টোবর অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, পরিশোধিত পাম অয়েল ও সয়াবিন বীজ– এই তিন পণ্য আমদানিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে। ১৯ নভেম্বর স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে আরও ৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দিয়ে শুধু আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট রাখে। তাতে বোতলজাত ও খোলা উভয় তেল লিটারে ১২ থেকে ১৩ টাকা কমার কথা। তবে বাজারে সেই পরিস্থিতি দেখা যায়নি। বরং কয়েক দিন ধরে বাজারে তেলের সংকট ছিল। ব্যবসায়ীরা লুকিয়ে পরিচিত ক্রেতাদের কাছে লিটারে ১০ থেকে ১২ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছে। এ পটভূমিতে গতকাল বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার ঘোষণা এলো। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার চার মাসের মাথায় এই প্রথম ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল।

প্রথম আলো

দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ২৮% বেকার’। প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেকারত্বের হার ২৮ শতাংশ। পাস করে যাঁরা চাকরিতে আছেন, তাঁরা বেশির ভাগ স্বল্প আয়ের চাকরি করেন। নারী শিক্ষার্থী ও গ্রামের পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্য বেকারের সংখ্যা বেশি।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত বার্ষিক উন্নয়ন সম্মেলনের তৃতীয় দিনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

সম্মেলনের একটি অধিবেশন ছিল শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নিয়ে। সে অধিবেশনে তিনটি গবেষণাপত্র তুলে ধরা হয়, যার একটি কিডনি চিকিৎসার ব্যয় নিয়ে। বাকি দুটি ছিল কমিউনিটি ক্লিনিক ও বেকারত্ব নিয়ে। অধিবেশনটিতে সভাপতিত্ব করেন ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাসের সহ-উপাচার্য এ কে এনামুল হক।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলো থেকে স্নাতক/স্নাতকোত্তর পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেকারত্বের পরিস্থিতি নিয়ে এ গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক এস এম জুলফিকার আলী। বিআইডিএস ২০২৩ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ওপর একটি গবেষণা করা হয়। সেই গবেষণার ধারাবাহিকতায় এবারের গবেষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

দেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৬০৮টি কলেজ রয়েছে। বিআইডিএস গবেষণার জন্য এর মধ্য থেকে ৬১টি কলেজ বেছে নেয়। গবেষণার জন্য ১ হাজার ৩৪০ জন পাস করা শিক্ষার্থী, পড়াশোনা চলছে এমন ৬৭০ শিক্ষার্থী, ৬১ জন অধ্যক্ষ ও ১০০ জন চাকরিদাতার সঙ্গে কথা বলেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীর ৪২ দশমিক ২৯ শতাংশ বেতনভোগী চাকরিজীবী। আর নিজেই উদ্যোক্তা হয়েছেন ১৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। খণ্ডকালীন চাকরি ও আরও পড়াশোনা চালিয়ে যান ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ। আর বেকার ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ।

গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা বেকার, তাঁদের মধ্যে নারী বেশি এবং এ সংখ্যা গ্রামের দিকে বেশি। এ ছাড়া সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থা থেকে যাঁরা এসএসসি পাস করে এসে স্নাতক শেষ করেছেন, তাঁদের মধ্যে বেকারত্ব বেশি। কারিগরি ও দাখিল পাস করে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেকারত্ব কম।

পাস করার পর বেকার থাকা প্রসঙ্গে বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক কাজী ইকবাল অনুষ্ঠানে বলেন, গত ১০–১২ বছরে দেশের অনেক কলেজ হয়েছে। এর ফলে পাস করে চাকরির বাজারে ঢোকা তরুণ বেড়েছে।

যুগান্তর

‘সমুদ্রবন্দরের বৈশিষ্ট্য হারাচ্ছে পায়রা’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতার প্রতিবেদন। খবর বলা হয়, সমুদ্রবন্দরের বৈশিষ্ট্য হারাচ্ছে পায়রা বন্দর। নাব্য সংকটে মালবাহী সমুদ্রগামী বিদেশি বড় জাহাজ এ বন্দরে ভিড়তে পারছে না। সমুদ্র উপকূল থেকে এ বন্দরে যাতায়াতের একমাত্র নৌপথ রাবনাবাদ চ্যানেলের অনেক স্থানের গভীরতা কমতে কমতে বর্তমানে মাত্র ৫ দশমিক ৪ মিটার বা ১৮ ফুটে দাঁড়িয়েছে। এতে জোয়ারের সময়ে মাত্র ১৪-১৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লাবাহী বিদেশি জাহাজ চলাচল করতে পারছে।

অথচ দেশের অভ্যন্তরীণ অনেক নদীবন্দরে যাতায়াতের নৌপথে এর চেয়ে বেশি গভীরতা রয়েছে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা সম্প্রতি নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সর্বনিম্ন গভীরতার এই তথ্য জানান। পলি জমে জমে গভীরতা আরও কমার আশঙ্কাও করছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা জানান, সমুদ্রবন্দরে সাধারণত কমবেশি ৪০ হাজার মেট্রিক টন নদীবন্দরে যাতায়াত করে। ওই বিবেচনায় সমুদ্রবন্দর হিসাবে কার্যকারিতা হারাচ্ছে পায়রা। যদিও ড্রেজিংয়ে এ পর্যন্ত সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। পায়রা সমুদ্রবন্দর ও নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আরও জানা গেছে, পায়রা সমুদ্রবন্দরের ভৌগোলিকগত অবস্থান, অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতির সংকট, প্রশাসনিক কার্যক্রমে দুর্বলতা, প্রশস্ত সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা নির্মাণে ব্যর্থ হওয়া, এনবিআরের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে এ বন্দরে বিদেশি জাহাজ আসার আগ্রহ দেখাচ্ছে না। শুধু বন্দরের পাশে গড়ে ওঠা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা ও যন্ত্রপাতি বহনকারী কিছু জাহাজ আসছে। ২০১৬ সাল থেকে চলতি বছরের গত ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৪৯৫টি বিদেশি জাহাজ এসেছে। চলতি বছরে মাত্র ১০৭টি বিদেশি জাহাজ এসেছে। এতে ৪১ লাখ ২০ হাজার ২০৬ টন পণ্য পরিবহণ করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পায়রা সমুদ্রবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ ও ড্রেজিংয়ের পেছনে এ পর্যন্ত সরকার ১৩ হাজার ৫৫২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এখন পর্যন্ত যেসব প্রকল্প চলমান রয়েছে, তাতে ব্যয় মোট ধরা আছে ১৬ হাজার ১৭৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ড্রেজিং ও ড্রেজার ক্রয়ের জন্য সম্প্রতি ৪৮১৩ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ের আরেকটি প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। অথচ মোট অঙ্কের অর্থ ব্যয়ের বিপরীতে চালুর পর থেকে গত ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ আয় করেছে ভ্যাটসহ মাত্র ৩৯৩ কোটি ৮২ লাখ ৫১ হাজার টাকা। এ বন্দরে ব্যয় হওয়া এ বিনিয়োগ আদৌ উঠে আসবে কি না-তা নিয়ে সন্দিহান নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় ও পায়রা বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ কারণে নতুন করে বিনিয়োগের বিষয়ে আগ্রহ কম অন্তর্বর্তী সরকারের।

কালের কণ্ঠ

দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতার খবর ‘চাঁদাবাজিতে ৩০ শতাংশ বাড়ছে পণ্যের দাম’। প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের নানামুখী উদ্যোগেও কমছে না সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি। হাত বদলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজরা। যার প্রভাব পড়ছে বাজারগুলোতে। হু হু করে বাড়ছে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম।

হাসিনা সরকারের পতনের পর মাসখানেক বন্ধ থাকলেও সিন্ডিকেট আর চাঁদাবাজরা ভোল পাল্টে আবার সক্রিয় হয়েছে। যার কারণে চাল, পেঁয়াজ, আলু, রসুন, মাংসসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যই চড়া দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস ধরে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। এর প্রভাবে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে গেছে।

এদিকে নিত্যপণ্যের দাম কমাতে অন্তর্বর্তী সরকার শুল্ক ও কর ছাড়ের মতো বেশ কিছু উদ্যোগ নিলেও সেই সুবিধা ব্যবসায়ীরা লুটে নিচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এখন আবার আগের অবস্থায় চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট ফিরে এসেছে। শুধু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হাতবদল হয়েছে।

কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর নিত্যপণ্যের দাম কমতে শুরু করেছিল।

কিন্তু এর কিছুদিন পর থেকে আবার দাম বাড়তে শুরু হয়। এর কারণ বাজারের পুরনো খেলোয়াড়রা আবার সক্রিয় হয়েছে।’ বগুড়ার মহাস্থান হাটে গতকাল সোমবার পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি শিম মানভেদে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়। তবে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শিম মানভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মহাস্থান হাটে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও রাজধানী ঢাকার খুচরা বাজারে কেজি ১২০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বেগুন কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও রাজধানীতে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে বাঁধাকপি প্রতি পিস আকারভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও বগুড়ার পাইকারি এই হাটে তা ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হয়। ফুলকপি প্রতি পিস আকারভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর খুচরা বাজারে। বগুড়ার পাইকারি বাজারে ফুলকপি কেজি হিসেবে বিক্রি হয়, প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মহাস্থান হাটে পাইকারিতে প্রতি কেজি কাঁচা টমেটো ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়, রাজধানীর খুচরা বাজারে কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বগুড়ার মহাস্থান হাটের আড়তদার আয়নাল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে শীতের সব ধরনের সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে এসেছে।’

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে নিয়মিত পণ্য নিয়ে ঢাকায় আসা ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উত্তরবঙ্গ থেকে একটি মালবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানসহ অন্যান্য বড় যানবাহন ঢাকায় ঢুকলে একাধিক স্থানে চাঁদা দিতে হয়। আবার ঢাকায় ঢোকার পর সেই পরিবহনকেই আরো একাধিক স্থানে চাঁদা দিয়ে বিভিন্ন বাজার ও স্ট্যান্ডে যেতে হয়। প্রতিটি স্থানে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা নেয় চাঁদাবাজরা।

ইত্তেফাক

‘স্নাইপার, এসএমজিসহ ভারী আগ্নেয়াস্ত্রগুলো কোথায়?’-এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের দিন ৫ আগস্ট দায়িত্বরত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যরা ভল্টে অস্ত্র জমা রেখে গণভবন ছেড়ে চলে যান। পরে অভ্যুত্থানকারীরা গণভবনে ঢুকে পড়লে এক পর্যায়ে ভল্টে রাখা এসএসএফের ৩২টি অত্যাধুনিক অস্ত্রও লুট হয়। এর মধ্যে অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, এসএমজি টি-৫৬-সহ অত্যাধুনিক সব আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। গোয়েন্দারা ধারণা করছেন, লুট হওয়া ঐ অস্ত্রগুলো হাতবদল হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সন্ত্রাসীদের হাতে চলে গেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঐ সময় পুলিশ, বিভিন্ন থানা, কারাগার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ হাজার ৮২৯টি অস্ত্র এবং ৬ লাখ ৬ হাজার ৭৪২টি গুলি লুট হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৪৬টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২ লাখ ৬২ হাজার গোলাবারুদ উদ্ধার করা যায়নি। এগুলো যদি সন্ত্রাসীদের হাতে গিয়ে থাকে তাহলে নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, অস্ত্রগুলো কোনো স্বাভাবিক মানুষের কাছে থাকার কথা না।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে নাজমুল বাহিনীর তিন সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে লংরেঞ্জ (স্নাইপার) রাইফেলসহ গত শুক্রবার আটক করেছে বিজিবি। তারা হলেন, নাজমুল বাহিনীর তিন সদস্য বড়ছড়া গ্রামের রাজু আহমেদ (২১) জালাল মিয়া (২৩) ও রাসেল মিয়া (২৫)। বিজিবির সিলেট সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বড়ছড়া এলাকায় মেসার্স শামীশ ট্রেডার্সের একটি পরিত্যক্ত কয়লা ও চুনাপাথর ডিপো অফিসে অভিযান চালিয়ে একটি ভারতীয় লংরেঞ্জ শুটিং রাইফেল উদ্ধার করা হয়। তবে এই অস্ত্রটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কি না—সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। একটি সূত্র বলছে, এটা ভারত থেকে সন্ত্রাসীরা এনেছে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর নড়াইলে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে গতকাল স্নাইপার স্কোপযুক্ত একটি রাইফেল ও বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। এ ঘটনায় চার জনকে আটক করা হয়। যদিও নড়াইলের নড়াগাতি থানার ওসি শফিকুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেছেন, তারা পরে নিশ্চিত হয়েছেন এটি আসল স্নাইপার রাইফেল না। ঐ আদলে বানানোর একটি আগ্নেয়াস্ত্র।

গত শনিবার মুন্সীগঞ্জের বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েতে তরুণীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তৌহিদ শেখ তন্ময়কে (২৮) গ্রেফতার করে পুলিশ। ঐ যুবক পুলিশকে জানিয়েছে, বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় তরুণীকে হত্যা করে সে। যে অস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়, সেটি গত ৫ আগস্ট ঢাকার ওয়ারী থানা থেকে লুট করা। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের একটি পুকুরে তল্লাশি চালিয়ে ঐ অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে। চট্টগ্রামে লুট করা অস্ত্র দিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আবার ঢাকার বিহারি ক্যাম্পে মাদক কারবারিদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময়ও থানা থেকে লুট করা অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে।

গণভবন থেকে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদের মধ্যে রয়েছে—অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, এসএমজি টি-৫৬, ফ্ল্যাশব্যাং গ্রেনেড, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম, বেতার যোগাযোগের ডিভাইস ও বিপুল গোলাবারুদ। এগুলো সবই ভারী আগ্নেয়াস্ত্র বলে জানা গেছে।

লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ বাইরে থাকায় কি নিরাপত্তাসংকট বাড়ছে? জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান বলেন, ‘বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ এখন যে উদ্ধার হয়নি, সেটা তো উদ্বেগের। এছাড়া গণভবন ও সংসদ ভবন থেকে এসএসএফের যে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়েছে, সেগুলো তো কোনোভাবেই সাধারণ নাগরিকের কাছে, এমনকি পুলিশের কাছে থাকাও উচিত নয়। এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ বাইরে থাকলে যে কোনো সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা থেকে যায়।’

নয়া দিগন্ত

দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম ‘মংড়ুতে বাংলাদেশ সীমান্তের শেষ বিজিপি ঘাঁটির পতন’। খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সাথে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্ঘাত-সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে গত রোববার কক্সবাজার-বান্দরবান সীমান্তবর্তী তুমব্রু কোনারপাড়ার ওপারে মিয়ানমারের মংডু অঞ্চলে সামরিক জান্তার সর্বশেষ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) ঘাঁটির পতন ঘটেছে। এ ঘটনার পর চলমান সহিংতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চলাচলরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার দেখলেই গুলি ছুড়ছে বিদ্রোহীরা।

এমন পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের টেকনাফজুড়ে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ দিকে মংডু দখলের পর সেখানে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলা, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাযজ্ঞের আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশে থাকা স্বজনরা। আরাকান আর্মির এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ফের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছেন। অন্য দিকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের চক্রান্তে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভারী অস্ত্র ঢুকিয়ে সেখানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ভারী অস্ত্র প্রদর্শনের ফলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভয়ে আছেন ক্যাম্পের মাঝি ও সাধারণ রোহিঙ্গারা।

একাধিক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গত ৮ ডিসেম্বর সকালে মিয়ানমারের বিদ্রোহী আরাকান আর্মির হাতে কক্সবাজার-বান্দরবান সীমান্তবর্তী তুমব্রু কোনারপাড়ার ওপারে মিয়ানমারের মংডু অঞ্চলে সামরিক জান্তার সর্বশেষ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) ঘাঁটির পতন ঘটেছে। সেখানে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত যুদ্ধ ও তুমুল গোলাগুলি চলছে। ওই অঞ্চল থেকে টেকনাফের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার হওয়ায় আরাকান আর্মির তোপের মুখে মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশ অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গোয়েন্দা সূত্র আরো জানায়, সুসম্পর্ক না থাকায় মংডু দখলের পর আরাকানিরা সেখানের মুসলমান রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল নামার আশঙ্কা রয়েছে।

গোয়েন্দাদের অপর একটি সূত্র জানায়, এ অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র প্রবেশ করিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিবেশ অশান্ত করারও চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র। পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেশটির চক্রান্তে ডিসেম্বরজুড়ে এ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া নাফ নদে গত রোববার থেকে কোনো নৌকা চলাচল করলে আরাকান আর্মি তাদের উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।

ডেইলি স্টার

দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘Yunus hints at announcement on polls this month’ অর্থাৎ ‘চলতি মাসেই নির্বাচন ঘোষণার ইঙ্গিত ইউনূসের’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তার সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে ‘এক ধরনের ঘোষণা’ আসবে।

তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ইউরোপের ১৯টি দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, লুক্সেমবার্গ, স্লোভাকিয়া, সাইপ্রাস, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া ও রোমানিয়ার মিশন প্রধানদের সঙ্গে ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন, সুইডেন ও নেদারল্যান্ডসের মিশন প্রধানরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

তবে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে বলে রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশে বলেন ইউনূস।

যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে, তখন তাকে দুটি দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল: নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং জাতির সামগ্রিক যন্ত্রপাতি, নীতি ও প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ইত্যাদি।

বণিক বার্তা

‘আট বছর পর আন্তর্জাতিক দরপত্র, কেউ সাড়া দেয়নি’-এটি দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালে আহ্বান করা আন্তর্জাতিক এক দরপত্রের ভিত্তিতে বঙ্গোপসাগরের গভীরে ১২ নম্বর ব্লকে গ্যাস উত্তোলনের কাজ পেয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার তেল-গ্যাস উত্তোলনকারী কোম্পানি পস্কো দাইয়ু। যদিও পেট্রোবাংলার সঙ্গে দাম নিয়ে মতবিরোধের কারণে একপর্যায়ে ব্লকটি থেকে গ্যাস না তুলেই চলে যায় কোম্পানিটি। পস্কো দাইয়ু এখন ওই ব্লকের পাশেই মিয়ানমার অংশে সমুদ্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করছে। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা ঘেঁষে অবস্থিত মিয়া ও শোয়ে কূপ থেকে কোম্পানিটি এরই মধ্যে কয়েক ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস তুলেছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এ গ্যাস পাইপলাইনে করে চীনে রফতানিও হয়েছে।

এ সময়ের মধ্যে দীর্ঘদিন সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আর কোনো দরপত্র আহ্বান করেনি পেট্রোবাংলা। প্রায় আট বছর বিরতির পর চলতি বছরের ১০ মার্চ বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। শুরুতে এ দরপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল গত ১০ সেপ্টেম্বর। পরে তা আরো তিন মাস বাড়িয়ে গতকাল ৯ ডিসেম্বর বেলা ১টা পর্যন্ত এ দরপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়। সময়সীমা বাড়ানোর পরও পেট্রোবাংলার আহ্বানে সাড়া দিয়ে দরপত্র জমা দেয়নি কোনো তেল-গ্যাস কোম্পানি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পেট্রোবাংলার আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য দরপত্রের নথি কিনেছিল বিদেশী সাতটি কোম্পানি। আর আগে করা বহুমাত্রিক জরিপের তথ্য-উপাত্ত কিনেছিল আরো দুটি কোম্পানি। যদিও তাদের কেউই শেষ পর্যন্ত দরপত্র জমা দেয়নি। এখন নতুন করে দরপত্রের আহ্বানে সাড়া না পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষণ করবে পেট্রোবাংলা। এরপর বিষয়টি নিয়ে জ্বালানি বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোর মধ্যে মার্কিন কোম্পানি এক্সনমবিল ও শেভরন, মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস, নরওয়ে ও ফ্রান্সের যৌথ বিনিয়োগী কোম্পানি টিজিএস অ্যান্ড স্লামবার্জার, জাপানের ইনপেক্স করপোরেশন ও জোগোম্যাক, চীনের সিনুক, সিঙ্গাপুরের ক্রিস এনার্জি এবং ভারতের ওএনজিসি আগ্রহ প্রকাশ করে বিভিন্ন সময় পেট্রোবাংলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এর মধ্যে সমুদ্রে বহুমাত্রিক জরিপের তথ্য কিনেছিল শেভরন, এক্সনমবিল, ইনপেক্স, সিনুক ও জোগোম্যাক। শেষ পর্যন্তু তাদের কেউই দরপত্র জমা দেয়নি।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দরপত্র কেনা কোম্পানিগুলোর মধ্যে কয়েকটি চূড়ান্তভাবে দরপত্র জমা দেবে বলে ধারণা করছিলেন তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেউই তা জমা না দেয়ার কারণ এবং এ বিষয়ে তাদের ভাবনা প্রসঙ্গে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এরপর পরবর্তী করণীয় নিয়ে সরকারের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

দেশ রূপান্তর

‘নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে চলতি মাসেই ঘোষণার ইঙ্গিত’-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে চলতি মাসেই ঘোষণা আসতে পারে এমনটি ইঙ্গিত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করে নেওয়া উচিত। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘পুরনো প্রচলিত সমস্যা পরিহারে নির্বাচনসংক্রান্ত কতিপয় সংস্কার নির্বাচনের আগেই শেষ করা জরুরি।’ গতকাল সোমবার ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তাদের প্রস্তাবগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তাদের সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, সরকার যদি এখন নির্বাচন দেয়, তবে সেটা হবে সেকেলে এবং তখন পুরনো সব সমস্যা আবারও ফিরে আসবে।

প্রধান উপদেষ্টা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন, যার জন্য নতুন নীতি এবং নতুন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন করতে খুবই আগ্রহী, আমরাও নির্বাচন করতে আগ্রহী।’

কূটনীতিকদের উদ্দেশে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি জনগণকে সরকারের দুটি দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করার চেষ্টা করছেন একটি হলো নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং অন্যটি হলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করা।

তিনি বলেন, ১৫টি বিভিন্ন কমিশন রয়েছে এবং সরকার আশা করছে, চলতি মাসের শেষ থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত এই কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন পেশ করবে।

নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংস্কার হলে সরকার নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেবে বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘দুটি প্রক্রিয়া আমাদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’

ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য খুবই রোমাঞ্চকর মুহূর্ত যে, এটি আমাদের বিজয়ের মাস এবং বৈঠকটি একটি বিশেষ মুহূর্তে। এটাই বাংলাদেশের প্রতি আপনাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন।’

-মানবজমিন

Translate »