Type to search

জাতীয় বাংলাদেশ

দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের ২ ধাপ অবনতি

২০২৪ সালে বাংলাদেশে দুর্নীতি পরিস্থিতির আরও দুই ধাপ অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)। দুর্নীতির ধারণা সূচকের ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী (ভালো থেকে খারাপ) বিশ্বের ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৫১ নম্বরে। গতবার এই তালিকায় বাংলাদেশ ১৪৯ নম্বরে ছিল। আবার অধঃক্রম অনুযায়ী (খারাপ থেকে ভালো) বিবেচনা করলে বাংলাদেশ অবস্থান এবার ১৮০ দেশের মধ্যে চতুর্দশ, যেখানে গত বছর ছিল দশম অবস্থানে। অন্য দেশগুলো আরও খারাপ করায় এই সূচকে চার ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।

২০২৪ সালের দুর্নীতির পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বার্লিনভিত্তিক সংস্থা টিআই গতকাল তাদের এই বার্ষিক সূচক প্রকাশ করে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান রাজধানীর ধানমণ্ডির মাইডাস সেন্টারে সংস্থাটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এবারের প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক এবং বাংলাদেশের দুর্নীতির পরিস্থিতি তুলে ধরেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতবারের মতোই এই সূচকে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের চেয়ে বাজে অবস্থায় আছে কেবল মিয়ানমার ও আফগানিস্তান। ১৬ স্কোর নিয়ে মিয়ানমার ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী (ভালো থেকে খারাপ) রয়েছে তালিকার ১৬৮ নম্বরে। আর তালিকার ১৬৫তম অবস্থানে থাকা আফগানিস্তানের স্কোর ১৬। গতবারের মতোই এ সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে ভুটান। ৭২ স্কোর নিয়ে ভুটানের অবস্থান সূচকের ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী ১৮ নম্বরে। এরপর ভারত ও মালদ্বীপ ৯৬ (স্কোর ৩৮), নেপাল ১০৭ (স্কোর ৩৪), শ্রীলঙ্কা ১২১ (স্কোর ৩২), পাকিস্তান ১৩৫তম (স্কোর ২৭)। ২৩ স্কোরে বাংলাদেশের সঙ্গে সূচকের একই অবস্থানের রয়েছে ইরান ও কঙ্গো।

টিআই-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এবারের সূচকে ১৮০টি দেশের গড় স্কোর গতবারের মতোই ৪৩। তালিকায় এবার সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে আফ্রিকার দেশ সাউথ সুদান, তাদের স্কোর ৮। এরপরে রয়েছে যথাক্রমে সোমালিয়া, ভেনেজুয়েলা, সিরিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া, ইরিত্রিয়া, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, নিকারাগুয়া ও সুদান। অন্যদিকে সর্বোচ্চ ৯০ স্কোর নিয়ে গতবারের মতোই তালিকায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে ডেনমার্ক। এরপরে রয়েছে ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড, লুক্সেমবুর্গ, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস ও অস্ট্রেলিয়া।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে সরকারি প্রকল্পে কেনাকাটায় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। অথচ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। দুদকসহ দুর্নীতি প্রতিরোধে সৃষ্ট সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তায় অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিস্তার ঘটেছে। তিনি বলেন, বিগত ১৩ বছর কর্তৃত্ববাদী সরকার মুখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললেও বাস্তবে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েছে, লালন করেছে। এমনকি দুর্নীতি সংঘটনে সহায়তা ও অংশগ্রহণ করেছে। এর প্রভাবে যথেচ্ছ লুটপাট, দুর্নীতিবাজদের রাষ্ট্রীয়ভাবে তোষণ, আইনের সঠিক প্রয়োগ না করা এবং সার্বিক কাঠামোগত দুর্বলতায় বাংলাদেশের অবস্থানের ক্রম অবনতি হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, দুদক সংস্কারে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো মেনে পদক্ষেপ নেয়া হলে বাংলাদেশের স্কোর বাড়ার সম্ভাবনা আছে। তবে সেটা নির্ভর করবে এ প্রতিষ্ঠানগুলো কতোটুকু কার্যকর এবং রাজনীতি ও আমলান্ত্রের পরিবর্তন কতোটুকু হবে তার ওপর। দুদক অসংখ্য মামলা হাতে নিয়েছে, দুদক চেষ্টা করছে দায়িত্বটা কার্যকরভাবে পালন করার জন্য। কতোটুকু হচ্ছে সেটা হয়তো আমরা পরে আরও বিশ্লেষণ করে বলবো।

-মানবজমিন

Translate »