Type to search

অপরাধ

সাবেক ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির সম্পদে নয়ছয়: দুদকের মামলা

জেলা প্রতিনিধিঃ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার টাকা অর্জন ও ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার তথ্য গোপন করার অভিযোগে টেকনাফ থানার বরখস্ত সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকী কারণের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে।

রবিবার (২৩ আগস্ট) চট্টগ্রাম দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দীন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ৪ কোটি আট লাখ ২৬ হাজার ১৭৫ টাকা মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতি করে অর্থ আয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দীন বলেন, বিকেল ৩টার দিকে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আইন অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রদীপ অন্য মামলায় আটক আছেন, আর তার স্ত্রী চুমকী পলাতক।

মামলার এজাহার বলা হয়েছে, সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকী কারণ দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন। দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন তারা। এর মধ্যে পালাতক চুমকীকে তার বাবা নগরীর পাথরঘাটায় একটি বাড়ি দানপত্র রেজিস্ট্রি করে দেন। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তে দুদক জানতে পারেন চুমকীর বাবা তার ২ ভাই ও ১ বোনের নামে কোনো বাড়ি দানপত্র করেননি। অথচ তার ২ ছেলের নামে উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পদও নেই। এতে প্রতীয়মান হয়, সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ তার ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ গোপন করার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে স্থানান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে তার শ্বশুরের নামে উক্ত বাড়িটি তৈরি করে রুপান্তরপূর্বক পরবর্তীতে তার স্ত্রী চুমকি কারণ এর নামে দানপত্র করে নিয়ে ভোগদখল করে আসছেন।

 

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, প্রদীপের স্ত্রী চুমকী কারণ একজন গৃহিনী। সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেন যে, ৫টি পুকুরে মাছ চাষ করে দেড় কোটি টাকা আয় করেছেন। তদন্তে ও ২০১৩-১৪ সালের আয়কর বিবরণী থেকে মৎস্য ব্যবসার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি তারা। তাই তিনি মৎস্য ব্যবসা থেকে কোনো আয় করেননি বলে দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে। দেড় কোটি টাকার মৎস্য খাত থেকে আয় গ্রহণযোগ্য নয় বলে এজাহারে উল্লেখ করেন।

২০১৮ সালে সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকী কারণের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে দুদক। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল তাদের ২জনকে ৭ কার্য দিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। ১২ মে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এ পৃথক সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন তারা।

প্রদীপ্র কুমার দাশ টেকনাফের আগে কক্সবাজারের মহেশখালী থানার ওসি, বায়েজিদ, সিএমপির পতেঙ্গা, ও পাঁচলাইশ থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসব জায়গায় কাজ করতে গিয়ে সমালোচনা ও নানা বির্তকের জন্ম দিয়েছেন ওসি প্রদীপ। একাধিকবারসাময়িক বরখাস্ত ও স্ট্যান্ড রিলিজও হয়েছেন। কিন্তু প্রতিবারই অদৃশ্য ছায়ায় পার পেয়ে গেছেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে অসংখ্য হত্যার অভিযোগে রয়েছে। এছাড়া নিরীহ লোকজনকে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

Translate »