রাজধানীতে বিভিন্ন হাসপাতালে অভিযান: ওয়ার্ড বয়কে দিয়ে অপারেশন, হাসপাতাল সিলগালা
রাজধানীতে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের স্বল্প মূল্যে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে মোহাম্মদপুরের নুরজাহান অর্থপেডিক্স হাসপাতালে একটি চক্র নিয়ে যেত। অথচ হাসপাতালটি এতোটাই অপরিষ্কার ও দুর্গন্ধ যে ফ্লোরে রক্ত মাখা কাপড় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। আর এসব অভিযোগে ওয়ার্ড বয় জাহাঙ্গীরকে ২ বছরের কারাদণ্ড ও হাসপাতালটির পরিচালক বাবুরকে ১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযান সম্পর্কে ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, রাজধানীর শ্যামলী ও মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে হাসপাতালে কম খরচে উন্নত চিকিৎসার আশ্বাসে দালাল সিন্ডিকেট বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে আনে। রোগী আনার জন্য তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। যার মধ্যে সরকারি হাসপাতাল সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া অন্যতম।
অভিযানে নুরজাহান অর্থপেডিক্স হাসপাতালে নোংরা পরিবেশ ও ওয়ার্ডবয়কে দিয়ে অস্ত্রোপাচার করার অভিযোগে হাসপাতালটির পরিচালক বাবুলকে ১ বছরের কারাদণ্ড ও ওয়ার্ডবয় জাহাঙ্গীরকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে অভিযান শেষে হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে ক্রিসেন্ট হাসপাতালের পরিচালক হাজী মোহাম্মদ আবুল হোসেন এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। অথচ একাধারে হাসপাতালটির পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তিনি। রোগীদের ভাঙা হাত-পায়ের এক্সরে দেখে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতেন তিনি। এমনকি ক্রিসেন্ট হাসপাতালের অনুমোদনের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে আরও ৪ মাস আগে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে আবুলকে ১ বছরের কারাদণ্ড ও সতর্ক করা হয়েছে হাসপাতালটিকে।
অভিযানের শুরুতেই অভিযান চালানো হয় রাজধানীর মক্কা-মদিনা হাসপাতালে। কোনো ধরনের চিকিৎসা দেওয়ার সনদ বা অনুমোদন নেই সেখানকার পরিচালক নূর নবীরও। অথচ রোগী দেখছেন তিনি এবং তাদের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। হাত-পা ভাঙাসহ নানা গুরুতর আহত যে রোগীরা আসছেন, তাদের অপারেশনের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছিলেন তিনি জানা গেছে।
এ অপরাধে হাসপাতালটির পরিচালক নূর নবীকে ১ বছরের কারাদণ্ডসহ আনোয়ার হোসেন কালু ও তার সহযোগী আব্দুর রশিদকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসাথে মক্কা-মদিনা হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
পলাশ কুমার বসু বলেন, দেশের নানা প্রান্ত থেকে ঢাকায় সরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষ আসে চিকিৎসা নিতে। বেশিরভাগই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল তারা। বেশি এসব দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন তারাই।