জমি-মার্কেট দখলের বরপুত্র আওয়ামী সাংসদ হাজী সেলিমের তালা শাসন
বিশেষ প্রতিনিধি : পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য স্থানীয় আওয়ামী সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী মোহাম্মদ সেলিম ও তার পরিবারের। তিনি যেন এ এলাকার অঘোষিত বাদশা। যেখানে চলে আসছিল এই পরিবারের নিজস্ব শাসনব্যবস্থা। নিজ বাড়ি ও ভবনে স্থাপন করা হয়েছিল টর্চার সেল। নিজস্ব বাহিনী দিয়ে এলাকায় জমি, বাড়ি ও মার্কেট দখল, জোরপূর্বক উচ্ছেদসহ চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির মতো গুরুতর শত শত অভিযোগ রয়েছে হাজী সেলিম ও তার ছেলে ইরফানের বিরুদ্ধে। ঝামেলাপূর্ণ জমি বা বাড়ি দেখলেই দখলের থাবা বসাতেন তারা। হাজী সেলিম নিজেই সেখানে গিয়ে নিজস্ব স্টাইলে বসাতেন সালিশ-দরবার। এরপর বাড়ির মালিকদের তিন মাস বাইরে ভাড়ায় থেকে কষ্ট বোঝার কথা বলে ওইসব বাড়িতে নিজ হাতে তালা লাগিয়ে সবাইকে বের করে দিতেন হাজী সেলিম। এ কারণে ধীরে ধীরে পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় ‘তালা হাজী’ হিসেবেও হাজী সেলিমের পরিচিতি গড়ে ওঠে।
মঙ্গলবার সরেজমিন চকবাজার এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে এমনই সব অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে হাজী সেলিমের বাড়িতে গেলেও পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা হাজী সেলিম বা তার পরিবারের বিষয়ে কথা বলতে গেলেই তাদের নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কথা বলে। তারা এমনও বলেছে, পত্রিকায় নাম-পরিচয় প্রকাশ হলেই তাদের গুম করে ফেলা হবে। ভয়ঙ্কর নির্যাতন ও দখলবাজির শিকার হয়ে হাজী সেলিম ও তার পরিবারের ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পায়নি। তবে ধীরে ধীরে অনেকেই সাহস করে কথা বলতেও শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, প্রায় দুই যুগ ধরে হাজী সেলিমের এই দখলবাজি চললেও কেউ কিছুই করতে পারেনি। এমনকি তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ যাওয়ার পর জায়গা ছেড়ে দিতে প্রশাসন থেকে বারবার বলা হলেও কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করেননি হাজী সেলিম। দুয়েকজন মুখ খুললেও তারা প্রতিনিয়ত জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, ১৯৯৬ সালে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে শুরু হয় হাজী সেলিমের দখলবাজি। তার দখলবাজিতে অতিষ্ঠ ও বিব্রত চকবাজার, লালবাগ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও।
স্থানীয়রা জানায়, নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধরের ঘটনায় কারাগারে থাকা হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম বর্তমানে তার বাবার মূল উত্তরসূরি হিসেবে কাজ করছিল। এলাকায় বর্তমানে সেও হয়ে উঠেছিল মূর্তিমান আতঙ্ক। মাঝখানে নিজের গাড়ি রেখে আগে ও পিছে দুটি গাড়ি ব্যক্তিগত সিকিউরিটি বহর নিয়ে চলত। প্রতিটি গাড়িতে থাকত আটজন করে প্রশিক্ষিত বডিগার্ড। এভাবে দ্রুতগতিতে চলাসহ এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে আধিপত্য গড়ে ইরফান। গত রোববার রাতে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় ইরফান গ্রেফতার হয়ে কারাগারে গেলেও তার সহযোগীরা এখনও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। যেখানে সোমবারও কোনো কিছু ছিল না, সেখানে মঙ্গলবার রাতারাতি ইরফানকে ভালো মানুষ সাজিয়ে ডিজিটাল ব্যানার টানানো হয়েছে। সেই ব্যানারে লেখা হয়েছে- ‘সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকের বিরুদ্ধে একজন মানুষ মোহাম্মদ ইরফান সেলিম।’ মঙ্গলবার বকশীবাজার চৌরাস্তা এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টের ওপর এটি স্থাপন করা হয়েছে।
হাজী সেলিমের দখলমুক্ত অগ্রণী ব্যাংকের জায়গা : হাজী সেলিম দীর্ঘদিন ধরেই অগ্রণী ব্যাংকের মৌলভীবাজার এলাকায় ১৪ শতক জমি দখলে রেখেছিলেন। গত রোববার রাতে নৌবাহিনীর অফিসারকে মারধরের ঘটনায় সোমবার বিকালে হাজী সেলিমের ছোট ছেলে ইরফান গ্রেফতার হলে অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের জায়গা দখলমুক্ত করে। সেদিন সন্ধ্যায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা ছাড়াই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিজেদের জায়গা বুঝে নেয়।
এ সময় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ১৪ শতক এই জায়গার মালিক অগ্রণী ব্যাংক। যেখানে দোতলা একটি ভবন ছিল। স্বাধীনতার পরপরই এই শাখা উদ্বোধন করা হয়। সম্প্রতি পুরনো ভবন ছেড়ে রাস্তার সামনের দিকে স্থানান্তর করা হয় ব্যাংকটি। করোনাকালে অগ্রণী ব্যাংকের পুরনো দোতলা ভবন গুঁড়িয়ে দিয়ে জায়গাটি দখলে নেয় হাজী সেলিমের লোকজন।
বধির সমিতির জমি দখল : হাজী সেলিম বধিরদের উন্নয়নে প্রতিষ্ঠিত সমিতির জমি দখলেও কুণ্ঠিত হননি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের লালবাগ থানা এলাকায় অবস্থিত ঢাকা সরকারি বধির হাইস্কুলের ১ একর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। জমিটি দখলমুক্ত করতে গত বছর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনও করে প্রতিষ্ঠানটির সদস্য ও শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থার প্রধান প্রকল্পের অনুকূলে সরকার লালবাগে ১ একর জমি স্কুলকে দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত করে অনুমোদন দেয়। কিন্তু হাজী সেলিম ওই জায়গাও জবরদখল করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থার সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী বরাবর অভিযোগ দিয়েছি; কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সরকারি যে দফতরেই গেছি তারা হাজী সেলিমের নাম শুনলেই কাপড়চোপড় নষ্ট করে ফেলে এমন একটা অবস্থা।’
তিনি জানান, ২০০৫ সালে বধির সমিতিকে জায়গাটি সরকার বরাদ্দ দেয়। এরপর ২০০৭ সালে সেটি দখলে নেন হাজী সেলিম। রাষ্ট্রপতির পক্ষে সে সময় ঢাকা জেলার ডিসি দলিলে স্বাক্ষর করে জায়গাটি রেজিস্ট্রি করে দিলেও প্রশাসন আজও তা উদ্ধার করতে পারেনি।
জিলাপিওয়ালার বাড়ি দখল : চকবাজার এলাকায় এক জিলাপি বিক্রেতার জমি রাতারাতি দখলের অভিযোগ রয়েছে হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসী জানায়, ওই পরিবারকে রাতে তিনটি মাইক্রোবাস দিয়ে মদিনা টাওয়ারে তুলে নেয় হাজীর লোকজন। এরপর জোরপূর্বক তারা জিলাপিওয়ালার জমি লিখে নেয় এবং ওই পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে। এখনও এ খবর ওই এলাকায় প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে।
দখল করা জমিতে মদিনা ও সরদার কোল্ড স্টোরেজ : এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, বেড়িবাঁধ এলাকার ১৬/বি হোল্ডিংয়ের ছোটকাটরায় হাজী সেলিম সরদার কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। এটিও এক ব্যক্তির জমি দখল করে বানানো। জায়গাটি দখলে নেওয়ার পর আজও তা উদ্ধার করতে পারেনি ওই পরিবার। বাধ্য হয়ে আদালতে তারা মামলা করে। কিন্তু সেই মামলার পর বিভিন্ন সময় নোটিস পাঠানো হলেও কোনো তোয়াক্কা করেননি হাজী সেলিম।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানায়, ওই বিষয়টির সমাধান চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও অভিযোগ দেওয়া হয়; কিন্তু কোনো কাজই হয়নি। ভুক্তভোগী একজন জানান, তার জমি দখলের জন্য হাজী সেলিম কামাল সাবান, কাসেম দুদু মিয়াকে দিয়ে ৪ কোটি টাকা পাবে বলে মিথ্যা দাবির নাটক সাজায়। রাতারাতি তারা তার ১২টি ট্রাক দখল করে মদিনা মেটালের ভেতরে রেখে দেয়। এরপর হাজী সেলিম তার কাছ থেকে জোরপূর্বক ২ কোটি টাকা আদায় করে। এ নিয়ে মামলা হলেও সেই টাকা তিনি আজও পাননি। তার ৫-৭ কাঠা জমি দখল করে মদিনা কোল্ড স্টোরেজ তৈরি করেন হাজী সেলিম। এ ছাড়াও ওই জমিতে জামিল পারভেজেরও ৫ কাঠা জমি ছিল বলে জানান তিনি।
মদিনা আশিক টাওয়ারের জায়গাটিও দখল করা : চকবাজারে অবস্থিত মদিনা আশিক টাওয়ারের জায়গাটিও দখল করে তৈরি করা হয়েছে। মদিনা আশিক টাওয়ার দখল করার জন্য মালিকের নামে ভুয়া মামলা দিয়ে হয়রানি করেন সেলিম। এরপর পুরো জায়গা দখল করে নেন। সে সময় অনেক নোয়াখালীর ব্যবসায়ীকে দোকান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সে কথা আর রাখেননি বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা।
তারা আরও জানিয়েছেন, ওই জমি দখলের কষ্ট সইতে না পেরে জমিটির অনেক মালিক সেখানেই আত্মহত্যা করেছিলেন। তারা বলছেন, হাজী সেলিম পুরান ঢাকায় অন্তত আড়াইশ স্পটে বাড়ি, দোকান ও মার্কেটের জায়গা দখল করেছেন। শুধু কি তাই, আশিক টাওয়ারের জমি দেখিয়ে পুবালী ব্যাংক থেকে হাজী সেলিম ৭০০ কোটি টাকা ঋণ নেন, যা এখনও শোধ করেননি। তারপরও মার্কেটের পজিশন বিক্রি করছেন তিনি। চান সরদার কোল্ড স্টোরেজের জমিতেও ভেজাল। সে জমি দেখিয়ে ব্যাংক ঋণ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে দখলের আরও যত অভিযোগ : হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে এত জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে যে তা গুনেও শেষ করা যাবে না বলে বলছিলেন এক বৃদ্ধ। মঙ্গলবার দুপুরে চকবাজার এলাকায় গেলে ওই বৃদ্ধ বলেন, গত দুই যুগে রাতারাতি তার লোকজনকে দিয়ে তিনি শত শত মানুষের জমি দখলে নিয়েছেন। পাকা ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। অনেক পরিবারকে উচ্ছেদ করেছেন। হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে শুধু ব্যক্তিগত জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে তা-ই নয়, সিটি করপোরেশন, নবাব পরিবারের সম্পত্তি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে। চকবাজারে মৌলভীবাজারের জায়গাটি সিটি করপোরেশনের হলেও সেটি তার অনুগত কাউন্সিলর বাবুলকে নিয়ে নামকাওয়াস্তে কিনে দখল করে নেন। এ ছাড়াও ঐতিহ্যবাহী আহসান মঞ্জিলের পাশে নবাব পরিবারের জমি দখল করে সেখানে মার্কেট করার অভিযোগ রয়েছে হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে। ঐতিহ্যবাহী তিব্বত হলের জায়গা দখল করেছেন তিনি। কিন্তু বিষয়টি সবার জানা থাকলেও প্রতিবাদ করার সাহস কেউ পায়নি। এ ছাড়াও চকবাজারে নরগলা সরদার হার্ডওয়্যার মার্কেটটি ভাওয়াল স্টেটের জমি দখল করে করা। ভাওয়াল রাজার স্টেটের সঙ্গে মামলা চললেও সেখানে থাকা বিহারিপট্টি তুলে দিয়ে মার্কেট নির্মাণ করেন সেলিম। আদালতের নোটিস ও ম্যাজিস্ট্রেট কয়েকবার ভবন নির্মাণে বাধা দিলেও তা অগ্রাহ্য করেন হাজী সেলিম।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, চকবাজারের মৌলভীবাজারে গুলমদন টাওয়ারের পাশে বিসমিল্লাহ টাওয়ার মার্কেটটিও দখল করে করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৯৯৭ সালে লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পানঘাট ইজারা পান। ইজারাঘাট বুঝে নিতে গিয়ে হাজী সেলিমের নেতাদের হামলার শিকার হন তারা। পরে তার লোকজনের ভয়ে আর ঘাট বসাতে পারেননি নেতাকর্মীরা। পুরান ঢাকার সোয়ারীঘাটের পাশে কামালবাগে খাল দখল করে ড্রামপট্টি তৈরি করেছেন হাজী সেলিম। যেখান থেকে তার প্রতি মাসে আয় হয় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা। এসবের পাশাপাশি পুরান ঢাকা কারাগারের ঢালে জাপান ভিডিও কমপ্লেক্সের জমি দখলে নিয়ে মদিনা ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড বানিয়েছেন সেলিম। এমনকি তার বিরুদ্ধে হাফেজা খাদিজা জামে মসজিদের জমি দখলেরও অভিযোগ করে স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, হাজী সেলিম আগে থেকে জমি দখলের বরপুত্র। তার অন্যান্য ব্যবসা থাকলেও মূল ব্যবসা জমি দখল। তিনি রাতারাতি জমি দখলের পরে সেই জমিতে ভবন তুলে তা চড়া দামে বিক্রি করেন বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা। তারা বলছেন, সম্প্রতি তার জবান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে এই তৎপরতা আরও বেশি আকারে বেড়েছে।
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি নবাবকাটরা এলাকার চানাচুর গলির খায়রুলের বাড়ি দখলের জন্য হাজী সেলিম নিজে গিয়ে বাসার গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরপর তার লোকজন ওই পরিবারকে মারধর শুরু করে এবং বাসা থেকে বের করে দেয়। এক পর্যায়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে তারা পালাতে বাধ্য হন। কিন্তু দুই কর্মী আটকা পড়ে। থানায় এ খবর পৌঁছার পর পুলিশ ছুটে এসে তালা ভেঙে ওই পরিবারকে বাসায় ঢুকতে সহায়তা করে।
এ ছাড়াও সম্প্রতি বেগমবাজারের জাপান ইলেকট্রনিক্স, চকবাজারের জাহাজ বিল্ডিং (যেটি ১৮৬০ সালে তৈরি) গেল রমজানের ঈদের চান রাতে সেটি দখল করেন এবং বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলেন। বিষয়গুলো এলাকার মুরব্বিরা জানলেও ভয়ে মুখ খোলেন না। এ ছাড়াও নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী যখন বুড়িগঙ্গার দখল জমি উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছিলেন ঠিক সে সময়ে হাজী সেলিম তার লোকজনকে দিয়ে দখলমুক্ত জমি দখলের জন্য বালু ফেলেছেন। এই বালু ফেলার সময় হাতেনাতে তার দুই কর্মচারী আটকও হয়। পরে হাজী সেলিম তাদের ছাড়িয়ে নেন বলে জানা গেছে।
পাশাপাশি চকবাজারে আশিক টাওয়ারের পাশে থাকা বশির টাওয়ার গেল কোরবানির ঈদের রাতে দখলে নিয়ে ভেঙে ফেলে হাজী সেলিমের লোকজন। এখনও সেই ভবনটি ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। এসব অভিযোগ ছাড়াও মৌলভীবাজারে ৮ কাঠা জমি দখল করে তার মালিককে নামকাওয়াস্তে মাত্র ১ কোটি ৮০ টাকা দিয়ে জোর করে সেই জমি দখল, চকবাজারের হ্যারিকেন মার্কেটের জায়গা, কলাপট্টির হোসনে আরা মার্কেট, মৌলভীবাজারের হল মার্কেটের জমিও দখল করেন হাজী সেলিম। পুরান ঢাকার নবাবপুরে নবাব এস্টেটের জমি দখল করে মার্কেট করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।