অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন লক্ষ্যমাত্রা কমে যাওয়ার আশঙ্কা, কোভিড-পরবর্তি অভিবাসন ঢেলে সাজাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিজ্ঞা
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারীর প্রতিক্রিয়ায় অস্ট্রেলিয়া দেশটির অভিবাসন কর্মসূচির পরিবর্তনের বিষয়ে তারা খোলা মনে এগুবে। এবং সেই সাথে তিনি বলেন যে মহামারীটির ব্যাপকতার সময় যে জবকিপার ভর্তুকি দেয়া হয়েছিল তা শেষ হওয়া উচিত।
গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
- অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি বিশেষ করে কৃষিখাত কর্মী সংকটের কারণে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
- অস্থায়ী ভিসাধারীদের মাধ্যমে কর্মশক্তির ঘাটতি পূরণ করার চিন্তাভাবনা।
- জবকিপারের বিস্তৃতি কমিয়ে বিশেষ কয়েকটি খাতে সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা।
প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি করোনাভাইরাস মহামারী থেকে পুনরুদ্ধার করতে অস্থায়ী ভিসাধারীরা কীভাবে কর্মশক্তির ঘাটতি পূরণ করতে পারে তা নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে অবশ্যই ভাবতে হবে।
মহামারীর প্রতিক্রিয়ায় অস্ট্রেলিয়ার মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথমবারের মতো অভিবাসন সংখ্যা নেতিবাচক স্তরে নেমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মিঃ মরিসন বলেছেন, সরকার কৃষি ও হসপিটালিটির মত ভিসা ক্লাস পর্যালোচনা বিবেচনা করতে পারে, এই খাতগুলো অস্থায়ী ভিসাধারীদের উপর নির্ভরশীল ছিল এবং ভ্রমণ বিধিনিষেধের দ্বারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
মন্তব্যটি করা হলো যখন অস্ট্রেলিয়া ধারাবাহিকভাবে কোভিড ১৯-এর স্থানীয় সংক্রমণহীন রয়েছে এবং আরও বেশি লোক ভাইরাসের টিকা গ্রহণ করছে।
সংক্রমণে এক সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত নিউ সাউথ ওয়েলসে এবং ভিক্টোরিয়ায় বেশ কিছু দিন কোন স্থানীয় সংক্রমণ নেই। এই মাসের শেষের দিকে জবকিপার শেষ হচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য নিয়োগকর্তারা প্রস্তুত হচ্ছেন।
করোনাভাইরাস দ্বারা প্রভাবিত ব্যবসায়গুলিকে সহায়তা করার জন্য এই জবকিপার অনুদান দেয়া হয়েছিল যখন সংক্রমণ সংখ্যা সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছেছিল।
তবে জবকিপার কর্মসূচি শেষ হয়ে এলে পর্যটন ও পরিবহন খাতে ব্যাপক সংখ্যায় ছাঁটাই হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তবে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন যে জবকিপার অনির্দিষ্টকালের জন্য চালিয়ে যেতে পারবেন না।
মিঃ মরিসন বলেন যে, যদিও জবকিপার বিভিন্ন খাত থেকে কমিয়ে আনা হবে, তবে বিমান, পর্যটন এবং ভ্রমণ খাতগুলিতে অতিরিক্ত সহায়তা দেওয়া হবে।
তিনি বলেছেন যে ফেডারেল সরকার শিক্ষানবিশদের জন্য মজুরি ভর্তুকি প্রকল্পও বাড়িয়ে দেবে, অর্থনীতিকে জবকিপার নির্ভরতা থেকে বের করে আনতে যে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তার প্রথম ধাপ হিসাবে ১.২ বিলিয়ন ডলার বাড়ানো হবে।
ফেডারাল এমপ্লয়মেন্ট মিনিস্টার মাইকেলিয়া ক্যাশ বলেছেন, বর্তমান সীমাটি বাদ দিয়ে সরকার ৭০,০০০ নতুন শিক্ষানবিশকে সহায়তা করার প্রত্যাশা করছে।
ফেডারেল ট্রেজারার জশ ফ্রাইডেনবার্গ বলেছেন যে তিনি আশা করেন যে অস্ট্রেলিয়ার ভ্যাকসিন রোল আউট দেশীয় পর্যটনকে বাড়াতে সহায়তা করবে।
কুইন্সল্যান্ডের পর্যটন খাত বর্তমানে বিশেষ উদ্বেগের বিষয়।
রাজ্যটিতে ভ্রমণ করার জন্য স্থানীয়দের জন্য আলাদা ২০০ ডলার করে ভাউচার ঘোষণার পরে কুইন্সল্যান্ড সরকার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে স্কুল শিক্ষার্থীদের অবকাশ ভ্রমণের জন্য এক মিলিয়ন ডলারের প্রোগ্রাম চালু করছে।
মিঃ ফ্রিডেনবার্গ সেভেন নেটওয়ার্ককে বলেছেন যে তিনি আশা করছেন যখন পরিস্থিতির উন্নতি হবে, তখন স্টেট ও টেরিটরিগুলোর সীমান্ত নিয়ে অস্ট্রেলিয়ানদের আর চিন্তা করতে হবে না।
ইতোমধ্যে টাসমানিয়া সরকার নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে হোবার্টে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কোয়ারেন্টীনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
টাসমানিয়ার প্রিমিয়ার পিটার গুটউইন অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, তাঁর সরকারের অগ্রাধিকার দেবে টাসমানিয়ায় মৌসুমী কর্মীদের নিরাপদ প্রবেশের ব্যবস্থাপনায়। তার রাজ্যে যখন নিরাপদ হবে তখন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কোয়ারেন্টীনের মাধ্যমে প্রবেশের অনুমোদন দেয়া হবে।
এসবিএস বাংলা