Type to search

Lead Story রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেশবাসী ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে: বিএনপি

জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণকে ‘মিথ্যাচারের কালো দলিল’ হিসেবে অভিহিত করে বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করেছে। দলটি বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ দুরভিসন্ধিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও অন্তঃসারশূন্য কথামালার ফুলঝুরি ছাড়া আর কিছুই নয়। দেশবাসী তার এই ভাষণ প্রত্যাখ্যান করেছে ঘৃণাভরে।

শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের যুগপূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্জলা মিথ্যাচার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশের তথাকথিত উন্নয়ন, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, মানুষের জীবনমান বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যখাতের ইতিবাচক পরিবর্তন, আইনের শাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানসহ যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তা মিথ্যাচারের কালো দলিল।

তিনি জানান, দেশপ্রেমিক জনগণ আজ যেন নিজ দেশে পরাধীন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত নন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিহিংসা, মিথ্যাচারে শিকার। গত এক যুগ ধরে দেশে আওয়ামী নিপীড়ন-নির্যাতন-শাসন-শোষণ-গুম-খুন-লুণ্ঠন। শুধু সরকারের ক্ষমতার খায়েশ মেটাতে দেশের প্রতিটি বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান ও সাংবিধানিককে ধবংস করে দেওয়া হচ্ছে।

রিজভী বলেন, দুর্নীতিবাজদের অভায়রণ্যে দেশটাকে পরিণত করা হয়েছে। এক দশকে দেশ থেকে ৯ লাখ কোটি টাকা পাঁচার করে দেওয়া হয়েছে, ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করে ফেলা হয়েছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতিবাজরা কানাডায় গড়ে তুলেছে বেগমপাড়া, বিভিন্ন দেশে গড়ে তুলেছে অবৈধ সম্পদের পাহাড়।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র হত্যা, খুন, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ, ভোটাধিকার হরণ, টাকা পাঁচার, দুর্নীতি-লুণ্ঠন ও দুর্বৃত্তায়ন, দুঃশাসনের একযুগ পার করল বাংলাদেশ। বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে ক্ষমতাসীন দুষ্টচক্র মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র সাম্য-মানবাধিকার-ন্যায় বিচারকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়ে মানুষকে বোকা বানাতে তথাকথিত উন্নয়নের স্লোগান তুলেছে। গণতন্ত্র হরণ করে যারা মানুষের বাক স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে কথিত উন্নয়নের একযুগ পূর্তি করতে চান তাদেরও পতন হবে।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে দেওয়া উন্নয়নের পরিসংখ্যানের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী জানান, দেশের মানুষকে যদি না খেয়ে রাত কাটাতে হয়, স্বল্প আয়ের মানুষরা যদি খেয়ে পড়ে বাঁচার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয়ের সাধ্য না থাকে, শিশুরা যদি স্কুলে যেতে না পারে তাহলে কিসের উন্নয়নের গল্প, কিসের জিডিপির প্রবৃদ্ধির উদ্ভট গল্প। তাদের এক যুগের সফলতা হলো-দেশের মানুষ এখন মৃত্যু আতঙ্কে ভুগছে, জীবিকার চিন্তায় অস্থির হয়ে আছে।

ভ্যাকসিন নিয়ে সরকার টালবাহানা করছে জানিয়ে তিনি জানান, কোভিড-১৯ টিকা নিয়েও আওয়ামী লীগের মাস্টার প্ল্যান জনগণের কাছে পানির মতো পরিষ্কার। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জানান, করোনাভাইরাস টিকার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। ভারতই নাকি ভ্যাকসিন রপ্তানি করবে। কিন্তু ভারতীয় হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশে কবে টিকা আসবে, তা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মামুন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

Translate »