Type to search

অর্থ ও বাণিজ্য বাংলাদেশ

চটের বস্তা বোঝাই জাহাজ যাচ্ছে সুদানে

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হলেও পাট রফতানিতে আবার সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন পর চট্টগ্রাম বন্দরে পুরো একটি জাহাজে বোঝাই হচ্ছে পাটজাত পণ্য। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) জাহাজ ‘বাংলার জয়যাত্রা’য় পাটজাত পণ্য বোঝাইয়ের কাজ চলছে বন্দরের ৬ নম্বর জেটিতে। বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশন (বিজেএমসি) এই পাটজাত পণ্য রফতানি করছে সুদানে। সুদান সরকার এর ক্রেতা। বৃহস্পতিবার ১৭ হাজার টন চটের বস্তা নিয়ে জাহাজটির বন্দর ছেড়ে যাওয়ার কথা পোর্ট সুদানের উদ্দেশে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, একসময় পাট ও পাটজাত পণ্য বোঝাই জাহাজ নিয়মিত যেত বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে। গত কয়েক বছর পুরো জাহাজ বোঝাই পাট বা পাটজাত পণ্য যায়নি। কন্টেইনারে করে সীমিত পরিসরে রফতানি হয়েছে। বাল্ক কার্গো হিসেবে পুরো জাহাজে পাটজাত পণ্য নিয়ে দীর্ঘদিন পর আবার যাত্রা করছে বিএসসির জাহাজ।

‘বাংলার জয়যাত্রা’র লোকাল এজেন্ট অল ইউনাইটেড মেরিটাইম (বাংলাদেশ) লিমিটেডের ব্যবস্থাপক সৈয়দ আহমেদ খোকন জানান, বাল্ক কার্গো হিসেবে ১৭ হাজার টন চটের বস্তা জাহাজীকরণের কাজ চলছে। প্রতিটি বেলে ৩০০ বস্তা আছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি হয় ৯৯ দশমিক ১১ কোটি ডলারের। এর মধ্যে চট, চটের বস্তা ও থলে রফতানি হয় ১০ দশমিক ৬৫ কোটি ডলারের, কাঁচা পাট ১৩ কোটি ডলারের, পাটের সুতা (জুট ইয়ার্ন) ৫৬ দশমিক ৪৫ কোটি ডলারের এবং অন্যান্য পাটজাত পণ্য রফতানি হয় ১৯ কোটি ডলারের।

রফতানি পণ্য হিসেবে গত অর্থবছরে চামড়াকে পেছনে ফেলে পাট আবার দ্বিতীয় স্থান দখল করে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে পাটের রফতানি প্রবৃদ্ধি আরও বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সারা বিশ্বে পরিবেশবান্ধব পণ্য হিসেবে পাটের ব্যবহার বাড়ছে।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহে পলিথিন নিষিদ্ধ করায় সেখানেও চাহিদা বেড়েছে পাটজাত পণ্যের। পাটের শপিং ব্যাগ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রথম তিন মাসে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি হয়েছে ৩০ দশমিক ৭৫ কোটি ডলারের। যা গত অর্থবছরের এই সময়ের চেয়ে ৩৯ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী ২০১৮-১৯ সালে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে আয় হয়েছে ৯৬ দশমিক ০৩ কোটি ডলার, ২০১৭-১৮ সালে ১১৪ দশমিক ৩৬ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ সালে ১০৮ কোটি ডলার, ২০১৫-১৬ সালে ১০৪ দশমিক ৯৭ কোটি ডলার, ২০১৪-১৫ সালে ৯৮ দশমিক ৪৮ কোটি ডলার।

করোনাভাইরাসের কারণে তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য রফতানি খাতে রফতানিতে সঙ্কট সৃষ্টি হলেও পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানির প্রবৃদ্ধি বাড়ায় একে আগামীর জন্য সুবাতাস হিসেবে মনে করা হচ্ছে। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৭টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করায় পাট রফতানিতে এই সুবাতাস ধরে রাখা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছে পাট রফতানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

Translate »