প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার বেতন খুব কম বলে মনে করেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এই বেতনে তার সংসার চালাতে কষ্টকর হয়ে পড়েছে। অথচ গত বছর জুলাইয়ে বরিস প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার আগে তিনি বর্তমান উপার্জনের চেয়ে অনেক বেশি আয় করতেন।
তাই আগামী বসন্তে তিনি পদত্যাগ করার কথা ভাবছেন বলে দাবি করেছেন তার দল কনজার্ভেটিভের কিছু এমপি। এ খবর প্রকাশ হয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য মিরর, দ্য মেট্রো এবং ভারতের অনলাইন সংবাদ মাধ্যম টাইমস নাউ নিউজ।
এতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী জনসন তার সহকর্মীদের কাছে অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার বার্ষিক আয় ১ লাখ ৫০ হাজার ৪০২ পাউন্ড। অথচ গত বছর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকায় কলাম লিখতেন ও সেমিনারে বক্তব্য রাখতেন তিনি।
এসব করে মাসে আয় করতেন ২৩ হাজার পাউন্ড তিনি। এমনকি ১ মাসে তিনি দুটি সেমিনারে বক্তব্য দিয়ে আয় করেছিলেন ১ লাখ ৬০ হাজার পাউন্ড। কিন্তু হোয়াইটহলের সূত্রগুলো মিডিয়াকে বলেছেন, আগামী গ্রীষ্মে পদত্যাগ করতে চান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ জন্য আর ছয় মাস ক্ষমতায় থাকবেন, যাতে ব্রেক্সিট পুরোপুরি সম্পন্ন করতে পারেন।
একজন এমপি জানান, প্রধানমন্ত্রীকে তার ৬ সন্তানকে বছরে ৪২ হাজার ৫০০ পাউন্ড খরচ হিসেবে দিতে হয়। এই খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন বরিস জনসন। ওই এমপি আরো জানান, বরিসের ৬টি সন্তান আছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন একেবারে কিশোর। আর্থিক সহায়তা দিতে হয় তাদেরকে।
অন্যদিকে বিয়ে বিচ্ছেদের চুক্তি অনুসারে সাবেক স্ত্রী মেরিনা হুইলারকে একটা বড় অংকের অর্থ দিতে হয়। তবে বরিস দীর্ঘদিন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন বলে দাবি করেছেন আরেকজন এমপি। জনসন সম্পর্কে একথা বলা হলেও মেট্রোর নিকট এসব কথা প্রত্যাখ্যান করেছে ১০ ডাউনিং স্ট্রিট। তবে আর কোনো মন্তব্য করতে তারা রাজি হয়নি।
উল্লেখ্য, সরকারি কর্মকর্তারা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীরা বক্তব্য বিবৃতি দিয়ে এবং নানা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে প্রচুর অর্থ আয় করতে পারেন। এমপিরা মনে করেন, বরিস জনসন তার পূর্বসূরিদের এমন উপার্জন দেশে নিজে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে গত বছর পদত্যাগ করার পর বক্তব্য বা লেকচার দিয়ে ১০ লাখ পাউন্ডের বেশি উপার্জন করছেন। প্রতিটি লেকচারের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন নিচ্ছেন ১ লাখ ২০ হাজার পাউন্ড। অন্যদিকে কনসালট্যান্সি কর্মকান্ড এবং বক্তব্য দেয়ার মাধ্যমে বর্তমানে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ পাউন্ডের মালিক সাবেক আরেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।