সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র: সামনে বাম, পেছনে আওয়ামী লীগ

‘সামনে বাম, পেছনে আওয়ামী লীগ’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, বামদের ওপর ভর করে দেশকে অস্থিতিশীল করার মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন, রাহাজানিসহ বিভিন্ন সামাজিক অপরাধের ইস্যুকে সামনে রেখে বাম রাজনৈতিক দল এবং তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোকে পরিকল্পিতভাবে মাঠে নামানো হচ্ছে। একই সঙ্গে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে গণজাগরণ মঞ্চের সেই কুশীলবরাও।
যারা প্রায় নিয়মিত শাহবাগ, জাতীয় জাদুঘর প্রাঙ্গণ, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, জাতীয় প্রেস ক্লাব, পল্টন মোড় প্রভৃতি এলাকায় সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি পালন করছে। এসব সংগঠনের কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছে আওয়ামী দোসররা। এজন্য বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, বাস্তবতা হলো-সামনে বাম, পেছনে রয়েছে আওয়ামী লীগ। আর নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নাড়ছে আমাদের বন্ধুপ্রতিম একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র যুগান্তরকে জানিয়েছে, মূলত মুখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বললেও বাস্তবে বেশির ভাগ বাম দল একে অপরের পরিপূরক হিসাবে কাজ করে। এজন্য বাম দলগুলোকে আওয়ামী লীগের বি-টিম হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়। অতীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের জোটবদ্ধ আন্দোলন করার বহু নজির রয়েছে। এছাড়া আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশের কাছে প্রথম পছন্দের দল আওয়ামী লীগ হলেও বিকল্প পুঁজি হচ্ছে বাম দল। আওয়ামী লীগ এবং বাম দলগুলোকে দিয়ে তারা নানা কৌশলে বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে। আওয়ামী লীগ এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়ায় বাম সংগঠনগুলোকে বিভিন্ন ইস্যুতে মাঠে নামানো হচ্ছে।
এদিকে হঠাৎ করে বামপাড়ার দলগুলো এবং গণজাগরণ মঞ্চের কুশীলবদের এভাবে রাজপথে সক্রিয় হওয়া নিয়ে রাজনীতির অন্দরমহলে আলোচনা-পর্যালোচনা চলছে। হচ্ছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিশেষ করে গত বছরের জুন-জুলাই-আগস্টজুড়ে দেশব্যাপী গড়ে ওঠা কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবির আন্দোলনে যাদের মাঠেই দেখা যায়নি, সেই বামরাই হুট করে এখন কেন রাজপথে সরব ও সক্রিয়। কিন্তু কেন-গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা দেশের বেশির ভাগ মানুষ এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত।
গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী এ প্রসঙ্গে রোববার যুগান্তরকে বলেন, বাম দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি বেশ পুরোনো। তাদের বিরুদ্ধে সুবিধাবাদী রাজনীতি করার অভিযোগও প্রতিষ্ঠিত। কিছু বাম দল যেমন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল, এখনো আছে। তেমনই কিছু বাম দল আবার বিএনপির সঙ্গেও আওয়ামী লীগবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে ছিল, এখনো আছে। আবার কিছু বামপন্থি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দ্বিদলীয় মেরূকরণের বাইরে নিজস্ব শক্তির বিকাশে কাজ করছে। তাই ঢালাওভাবে সবাইকে এক পাল্লায় মাপা যাবে না। তবে এটা ঠিক, বামপন্থি অনেক দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের পুরোনো এবং ঐতিহাসিক সখ্য রয়েছে। সুবিধাবাদী রাজনীতির অংশ হিসাবে তারা আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তি করেছে, আওয়ামী লীগের বদান্যতায় মন্ত্রী-এমপি হয়েছে। নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খণ্ডন করে দলটির সাধারণ সম্পাদক সরদার রুহিন হোসেন প্রিন্স রোববার যুগান্তরকে বলেন, ঢালাওভাবে এসব অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত এবং পরিকল্পিত অপপ্রচার। যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। তাই আমাদের কাছে এ অভিযোগ একেবারেই গুরুত্বহীন। তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টের যে চেতনা, এর মূলে রয়েছে বৈষম্যমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধেরও মূল চেতনা ছিল। আমরা মনে করি, বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার যে লড়াই, সেই লড়াই অব্যাহত রাখতে বাম বিকল্প শক্তির বিকাশ ঘটাতে হবে। পাশাপাশি দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উত্তরণ এবং জনজীবনে স্বস্তি, শান্তি ও নিরাপত্তায় চলমান কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে।
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ‘কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে ভিন্নমত ইসির’। খবরে বলা হয়, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ নিয়ে আগেই আপত্তি তুলেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবার তারা ১০টি ক্ষেত্রে অন্তত ২৮টি সুপারিশের বিষয়ে নিজেদের ভিন্নমত লিখিতভাবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে তুলে ধরেছে। ইসি মনে করে, সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে সাংবিধানিক এই সংস্থার স্বাধীনতা খর্ব হবে।
নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে গতকাল সোমবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বরাবর চিঠি পাঠায় ইসি। সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য গঠনের কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আপত্তি জানিয়ে ইসির চিঠি ও তাদের কিছু কার্যক্রম সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে চলে যাচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন সামনে এসেছে। কারণ, ইতিমধ্যে ইসি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসার আগেই নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনপ্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। ইসি সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইনে সংশোধনী আনার প্রস্তাব দিয়েছে। যদিও এসব বিষয়ে সংস্কার কমিশনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আছে। ইসি, রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনদের মতামত, জরিপ ও নিজেদের পর্যালোচনার ভিত্তিতে সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করেছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
কালের কণ্ঠ
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘হাতে বেশি সময় নেই ডিসেম্বরে নির্বাচন’। খবরে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে খুব বেশি সময় নেই। আমরা এরই মধ্যে সাত মাস পার করে এসেছি। আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। কাজেই কী কী সংস্কার করতে চাই করে ফেলতে হবে।
গতকাল সোমবার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ১২৭ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। এ ছাড়া নির্বাচন আসন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচন আসছে, নানা রকম সমস্যা হবে, নানা রকম চাপ আসবে। অনেকে ডেসপারেট হয়ে যাবে, আমার কেন্দ্রে জেতাতে হবে, ওর কেন্দ্রে জেতাতে হবে। সেখানে পুলিশ আইন মানাতে চাইলে তারা খেপাখেপি করবে।
আমাদের সেখানে শক্ত থাকতে হবে, আইনের ভেতরে থাকতে হবে, যাতে যে সরকার নির্বাচিত হয়ে আসবে, সে সরকার আইনের সরকার হয়। যে আইন ভেঙে আসবে, সে কখনো আইন ধরে রাখতে পারবে না। কারণ আইন ভাঙাই তার অভ্যাস।’ প্রধান উপদেষ্টার গতকালের এই বক্তব্যে অনেকেরই ধারণা, অন্তর্বর্তী সরকার ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’-এর দিকেই যাচ্ছে।
সমকাল
‘কাগজে আইনজীবী রাহাত, বিল তুলেছেন তাপস’-এটি দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ৬ কোটি টাকার গ্যারান্টি নগদায়ন ঠেকানোর জন্য আদালতে দায়ের করা এক রিটের জন্য ২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার আইনি বিল দেওয়া হয়েছে। কাগজকলমে রিট পরিচালনার আইনজীবী হিসেবে নাম রয়েছে ব্যারিস্টার রাহাত খলিলের। অথচ বিলের ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা পেয়েছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক পরিদর্শনে দুর্নীতির এ তথ্য উঠে এসেছে। পরিদর্শনে গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাহাত খলিলের নামে দুর্দশাগ্রস্ত ও রুগ্ণ ব্যাংকটির আইনি বিল হিসেবে মোট ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
শেখ ফজলে নূর তাপস গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক দিন আগে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাইয়ের ছেলে। ২০২০ সালে মেয়র নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় তাপস উল্লেখ করেন, আইন পেশায় তাঁর বার্ষিক আয় ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৫ ও ২০০৬ সালে কাস্টম হাউসের অনুকূলে ৬ কোটি টাকার ১৫টি ব্যাংক গ্যারান্টি ইস্যু করে তৎকালীন ওরিয়েন্টাল ব্যাংক। মালিকানা বদলের পর আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এসব গ্যারান্টি জাল দাবি করে। কাস্টমস যেন বিল নগদায়ন করতে না পারে, সে জন্য ২০১৩ সালে একটি রিট করা হয়। ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবী হিসেবে ব্যারিস্টার রাহাত খলিল মামলাটি দেখতেন। অথচ গত ১১ বছরে রিট পিটিশনের ক্ষেত্রে কোনো রুলের শুনানির আবেদনই হয়নি। বরং বারবার ‘স্টে অর্ডার’-এর মাধ্যমে সময় ক্ষেপণ করা হয়েছে। উচ্চ আদালত থেকে ২০ বার স্থগিতাদেশ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ‘স্টে অর্ডার’-এর জন্য গড়ে আইনি বিল নেওয়া হয়েছে ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা যা অস্বাভাবিক মনে করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দল।
ইত্তেফাক
দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ‘নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে আপত্তি ইসির’। খবরে বলা হয়, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে ইসির স্বাধীনতা খর্ব হবে বলে মনে করছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া নির্বাচন-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করতে গেলে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হবে। কিছু ধারা অসত্ উদ্দেশ্যে ব্যবহূত হতে পারে। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো আরেকটি নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঘটবে এবং অহেতুক প্রশ্নবিদ্ধ হবে নির্বাচন কমিশন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ভিন্নমত জানিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে ঐকমত্য কমিশনে চিঠি পাঠনো হয়েছে। ভিন্নমত পোষণ নয় কি দশটা হবে। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রিয়াজকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে মতামত দেওয়ার কারণই হচ্ছে ইসির ক্ষমতা খর্ব হওয়ার জন্য। খর্ব না হলে তো পাঠাতাম না। কমিশনের ভিন্নমত প্রকাশ করার সুযোগ আছে, সেখানে মতামত দিয়েছে।
সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন সংস্কার কমিশন গত ৮ ফেব্রুয়ারি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে কার্যকর করার জন্য ও নির্বাচন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে ১৬টি ক্ষেত্রে ১৫০ সুপারিশ জানিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরবর্তীকালে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ছয়টি সংস্কারের কমিশনের প্রধানদের নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। ঐকমত্য কমিশনের প্রধান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত চিঠিটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বরাবর পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠির অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, আইন সচিবকেও দেওয়া হয়েছে।
নয়া দিগন্ত
‘মৌলিক সংস্কার প্রসঙ্গে দ্বিমত থেকে যেতে পারে’-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে বড় দলগুলো এখনো তাদের মতামত ঐকমত্য কমিশনের কাছে জমা দেয়নি। তবে বিএনপি ও জামায়াতসহ সব বড় দল এটি নিয়ে কাজ করছে। তারা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখে সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ব্যাপারে তাদের মতামত জানাবে। এর মধ্যে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তাদের আলোচনা শুরু করবে। এর পর স্বাধীনতা দিবস ও ঈদসহসহ ১০ দিন ছুটির জন্য আলোচনা মুলতবি থাকবে। ছুটির পর সিরিজ আলোচনা চালাবে ঐকমত্য কমিশন। ঈদের আগেই বিএনপি জামায়াত ও সিটিজেন পার্টিসহ বড় দলগুলোর মতামত পাওয়া যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিএনপি: ‘রাষ্ট্র সংস্কার করবে নির্বাচিত সংসদ’, দলীয় এমন অবস্থানের ভিত্তিতেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেয়া প্রস্তাবনাগুলোর জবাব প্রস্তুত করছে বিএনপি। সংবিধান, জনপ্রশাসন, পুলিশ, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কমিশনগুলো যেসব প্রস্তাবনা দিয়েছে, সেগুলো নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই টানা বৈঠক করছে দলটি।
জানা গেছে, বিএনপি তিন বছর আগে রাষ্ট্র মেরামতের যে ৩১ দফা ঘোষণা করেছিল, তার আলোকেই ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর ক্ষেত্রে দলীয় অবস্থান তুলে ধরবে। এক্ষেত্রে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যেসব সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলোতেই মূল ফোকাস করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে দলটি তাদের মতামত ঐকমত্য কমিশনে জমা দিতে পারে।
আজকের পত্রিকা
দৈনিক আজকের প্রত্রিকার প্রধান শিরোনাম ‘বদলাচ্ছে বিসিএসের সিলেবাস’। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ( বিসিএস ) নিয়োগ পরীক্ষার সিলেবাস বদল হচ্ছে । এই সিলেবাসকে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ( পিএসসি ) । এ জন্য গঠিত কমিটি কাজও শুরু করেছে । কমিটির কাজ শেষে অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে পরিমার্জিত সিলেবাস চূড়ান্ত করা হবে । জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনও বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস সংশোধন ও ছয়টি আবশ্যিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে । বিসিএস কর্মকর্তা নিয়োগে তিন ধাপে প্রার্থী বাছাই করা হয় । এগুলো হলো প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা ।
পিএসসির সূত্র বলেছে , বিসিএসের সিলেবাস বদলের উদ্যোগের অংশ হিসেবে বর্তমান সিলেবাস পর্যালোচনার জন্য কমিশনের নবম বিশেষ সভায় পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয় । পরে কমিটি গঠন করা হয় এবং পিএসসির একজন সদস্যকে এর আহ্বায়ক করা হয় । কমিটি ইতিমধ্যে একটি বৈঠক করেছে।
তবে পিএসসিতে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তি ও কিছু সদস্য বাদ পড়ার কারণে ‘ সিলেবাস রিভিউ কমিটি ‘ পুনর্গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । কমিটির সদস্যসংখ্যা বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে । পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড . মোবাশ্বের মোনেম ১২ মার্চ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিএসসি কার্যালয়ে নিজ দপ্তরে আজকের পত্রিকাকে বলেন , বর্তমানে যে সিলেবাসে বিসিএস পরীক্ষা ( প্রিলিমিনারি , লিখিত পরীক্ষা ) হচ্ছে , তা যুগোপযোগী করা প্রয়োজন । এ জন্য বর্তমান সিলেবাস পর্যালোচনায় গঠিত ‘ সিলেবাস রিভিউ কমিটি ‘ কাজ শুরু করেছে । তিনি বলেন , সময়ের প্রয়োজনে কমিটির আকার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে ।
দেশ রূপান্তর
‘ধর্ষণের বিচারে নতুন ধারা’-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় কমিয়ে আনা, ডিএনএ রিপোর্ট ছাড়াই মেডিকেল সনদের ভিত্তিতে মামলার কাজ চালানোসহ বেশ কিছু নতুন বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধনীর ব্যাপারে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। পাশাপাশি শিশু ধর্ষণের বিচার দ্রুতœ শেষ করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করার বিধান রাখা হচ্ছে আইনে।
অন্যদিকে নারী ও শিশু নির্যাতনসংক্রান্ত অপরাধ নির্ণয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আপাতত চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে দুটি ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হবে।
গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক বিশেষ সভায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন), অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
ডেইলি স্টার
দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘EC opposes key reform proposals’ অর্থাৎ ‘সংস্কার প্রস্তাবে আপত্তি ইসির’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি), যার মধ্যে রয়েছে আসন পুনর্বিন্যাস, স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি এবং নির্বাচন কমিশনারদের বিরুদ্ধে তদন্তের প্রস্তাব।
গতকাল জাতীয় ঐক্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজকে পাঠানো এক চিঠিতে আপত্তি জানানো হয়। এছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সংসদীয় নির্বাচনের সময় পিছিয়ে যেতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়।
জাতীয় ও সমস্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচন চার মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার প্রস্তাবের ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছে ইসি। তাদের যুক্তি, পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে যে স্থানীয় নির্বাচনগুলো ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। তাই, এগুলো সম্পন্ন করতেই প্রায় এক বছর সময় লেগে যায়।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান শিরোনাম ‘পুলিশকে শক্ত থাকার বার্তা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশকে শক্ত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। পুলিশের শীর্ষ ১২৭ কর্মকর্তার মাধ্যমে পুরো বাহিনীকে দলনিরপেক্ষ থাকার স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন সরকার প্রধান। বিশেষ বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে, ‘কোনো ছাত্রসংগঠন এবং কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতি যেন পুলিশ অনুরাগী না হয়। এ বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে সেখানে কোনো দলের পক্ষে কাজ নয়। মোকাবিলা করতে হবে যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ওইসব দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
-মানবজমিন