সচিবালয়ে আগুন গভীর ষড়যন্ত্রের আলামত
স্বপ্না গুলশান:
বাংলাদেশে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে আগুন ! এটা সাধারণ কোন ঘটনা নয়। এর পিছনে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র । হাসিনার আমলে গত ১৬ বছর ধরে এই সচিবালয় ছিল দুর্নীতির ঘাটি। পিওন থেকে শুরু করে ড্রাইভার, আমলা, মন্ত্রী সবাই জড়িত টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বানিজ্য, তদবির বাণিজ্যসহ সবরকমের অপকর্মে।
গণবিক্ষোভ আর তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে শত শত প্রাণের বিনিময়ে, এক প্রকার ঝেটা পেটা করেই স্বৈরাচারী হাসিনাকে দেশছাড়া করলো বিপ্লবী ছাত্র-জনতা । অথচ হাসিনার রেখে যাওয়া ১৬ বছরের দোসরদের আপনারা সচিবালয়ে রেখে দিলেন । তাদেরকে সচিবালয় ও প্রশাসনের সবখানে বহাল তবিয়তে রেখে আপনারা (বিপ্লবী সরকার) দেশ সংস্কার করবেন – এতো বিষধর সাপের লেজে পা রেখে খেলা করার মতো অবস্থা।
ওদের ১৬ বছরের দুর্নীতি বন্ধ হয়ে গেছে, তার উপরে আবার সেসব দুর্নীতির তদন্ত করছেন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনা কে তলব করছেন, ভারতের আধিপত্য বন্ধে কঠোর অবস্থান নিচ্ছেন । ইন্ডিয়ার বিদেশ গোয়েন্দা সংস্থা “র” কি বসে আছে ? এতসব পাহাড়সম কঠিন কাজ তো সাপের লেজে পা রেখে করা যাবেনা বিপ্লবী ভাই বোনেরা ।
“র “ এর সাথে একযোগে হাসিনার দোসররা বিষধর সাপের মতো সুযোগ পেয়েছে, ছোবল দিয়েছে । আর এখন তদন্ত করতেছেন “সচিবালয়ে আগুন লাগলো কিভাবে?” আগে থেকে কেন এসব ষড়যন্ত্রের বিষয়টা মাথার মধ্যে ছিলনা আপনাদের? রাষ্টীয় গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা, স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয় এর ব্যর্থতার দ্বায় কে নেবে ?
অপরাধীর প্রতি মানবতা, অতি ভদ্রতা, এত দয়া, মায়া – মমতা, কোমল মন মানসিকতা দিয়ে বিপ্লব পরবর্তী গঠিত সরকার সফল হতে পারেনা। কারণ আপনার চারপাশে তো কিলবিল করছে স্বৈরাচারের রেখে যাওয়া দুর্নীতিতে অভ্যস্ত অমানুষগুলো । ওদের তো গনতন্ত্র, মানবাধিকার ও দেশ সংস্কারের দরকার নাই, ওদের দরকার ওই আওয়ামী আমলের মতো দুর্নীতিবাজ মাফিয়া হাসিনা সরকার ।
কারণ ওরা দেশ জাতির কল্যান বোঝেনা, ওদের দরকার শুধু দুর্নীতি, ধান্দাবাজি করে টাকা কামানো আর সে টাকা বিদেশে পাচার করা। এভাবে ১৬ বছর ধরে হাসিনার মগের মুল্লুকের রাজ্যে এরা মহাসুখে বসবাস করে আসছিল । হঠাৎ এসব সংস্কার এর নামে তাদের তদবির বাণিজ্য , ঘুষ , দুর্নীতি করার প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ালেন আপনারা ।
১৬ বছরের এক স্বৈরাচারী দানব সরকারকে হটিয়ে আপনারা দেশের চালকের আসনে বসেছেন । একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে আমাদের সবাইকে । হাসিনাকে ক্ষমতায় ফেরানোর জন্য মরিয়া তার দুর্নীতিবাজ দোসররা আর ভারতের মোদী সরকার । তাদের অপপ্রচার তো চলছে প্রতিনিয়ত।
এদিকে নোবেল বিজয়ী ডক্টর ইউনুসের যে মনোভাব যেমন শান্তি প্রতিষ্ঠা করা , সবাইকে নিয়ে এগুতে হবে এসব ধীরে চলা মনোভাব আর মহানুভবতা বিপ্লব পরবর্তী পরিস্থিতিতে কোনো কাজে দেবেনা । বরং সমস্যা বাড়বে ।
আপনাদের সবখানে গভীর বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে। মনে রাখবেন আবেগ, ক্ষমা, মায়া মমতা দেখানোর বহু সময় আছে। সংস্কার করতে যা প্রয়োজন আপনারা ঝটপট সেটি করে ফেলুন ।
আর প্রশাসনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা সচিবালয়ে যখন হাসিনার রেখে যাওয়া এসব দোসররা আগুন দিতে পেরেছে তখন বিপ্লবী সরকারের সবখানেই ওরা ঘাপটি মেরে বসে থেকে আরও বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটাবে । কারণ আওয়ামী দোসরদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে । ওরা এখন মরণ কামড় দেবে।
আপনাদের বিপ্লব পরবর্তী ইউনুস সরকারকে বার্থ করতে ওরা এখন ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা “র” এর পরিকল্পনায় বিশেষ কৌশলে এগুচ্ছে । আজ সচিবালয়, কাল হয়ত অন্য কোন অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানবে ।