সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে জাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ঘটে যাওয়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহুয়া মঞ্চ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীদের ‘ক্যাম্পাসে খুন কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা মানি না, মানবো না’, ‘খুনিদের আস্তানা ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’, ‘ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করো, করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ইমনের সঞ্চালনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘গতকালকে আমাদের ক্যাম্পাসে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা খুবই ন্যাক্কারজনক একটি ঘটনা। আমরা সবসময় আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার যে শাসন কাঠামো তৈরি করেছিলো সেটা পরিবর্তন করতে চেয়েছি আর সেটার সবথেকে বড় উদাহরণ হতে পারতো গতকালকে যাকে মারা হলো তাকে আইনের হাতে তুলে দেওয়া। কিন্তু এখানে আমরা দেখতে পাই একটা গোষ্ঠী খুবই পরিকল্পিত ভাবে মব জাস্টিসের মাধ্যমে শামীম মোল্লাকে প্রহর করে এবং পরবর্তীতে পুলিশের হেফাজতে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ভিডিও, ছবি এবং সিসিটিভি ফুটেজসহ যত প্রমাণ আছে সবকিছুকে আমলে নিয়ে প্রকৃত সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাদী হয়ে মামলা করতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, ‘যাকে-তাকে ছাত্রলীগের ট্যাগ দিয়ে আবার তার অধিকার হরণ করা হবে; আমরা আবারও শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের নতুন ধরনের রূপায়ণ দেখতে পাব—এ জন্য আমার ভাইবোনেরা রক্ত দেয়নি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী শাসনামলে রাজনীতি করার অন্যতম প্রক্রিয়া ছিল লাশের রাজনীতি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও একটি লাশ পড়েছে যা নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন রাজনীতি। যারা রাজনীতি শুরু করেছে তারা মূলত স্বৈরাচারের দোসর অথবা তাদের প্রক্রিয়া স্বৈরাচারেরই মতো। গতকাল রাতে যে খুন হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আমরা এর বিচার দাবি করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নবনিযুক্ত প্রশাসনের দুর্বলতায় এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। একই সঙ্গে মৃত্যুটা হয়েছে পুলিশি হেফাজতে। পুলিশ কেন একজন সুস্থ মানুষকে তার হেফাজতে নিয়ে হত্যা করল এর সঙ্গে বড় কোনো ষড়যন্ত্র যুক্ত কিনা আমাদেরকে খতিয়ে দেখতে হবে। কাল রাতে ক্যাম্পাসে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কিছু অছাত্রকে কেন প্রক্টর অফিসে ঢুকতে দেওয়া হলো এর জবাবও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দিতে হবে।’
-ইত্তেফাক