বহিষ্কার করেও ঠেকাতে পারছে না বিএনপি
রংপুরের আট উপজেলার চারটিতে দুই ধাপে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। বাকি চারটির মধ্যে তৃতীয় ধাপে দুই উপজেলায় ২৯ মে এবং দুই উপজেলায় চতুর্থ ধাপে ৫ জুন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করলেও দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে রংপুরের বিভিন্ন উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দলটির নেতাকর্মীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় রংপুরের চার উপজেলার সাত নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। তার পরও দলের তৃণমূল নেতাকর্মীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে পারেনি।
প্রথম দফায় পীরগাছা উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ মো. ফরহাদ হোসেন অনু ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। দলটির একাধিক সূত্র জানায়, পীরগাছা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন মাত্র দেড় হাজার ভোটে জয়ী হন। তাঁর পক্ষে উপজেলা বিএনপির নেতারা কাজ করেন। নিজেরা সরাসরি অংশ না নিয়ে পরোক্ষভাবে দলের নেতাকর্মীকে এই আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে কাজ করতে নির্দেশনাও দেন তারা।
কাউনিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম মায়ার পক্ষে হারাগাছ পৌর এলাকার অধিকাংশ বিএনপি নেতাকর্মী কাজ করেছিলেন। যদিও উপজেলা বিএনপির নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।
বুধবার তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে গঙ্গাচড়ায় সাতজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর তালিকার মধ্যে বিএনপির দু’জন রয়েছেন। তারা হলেন– আলমবিদিতর ইউনিয়নের সদ্য পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোকাররম হোসেন সুজন এবং বেতগাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও গঙ্গাচড়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান লিপ্টন। অন্যজন হলেন রংপুর সদরের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাইয়ুম যাদু। ইতোমধ্যে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সুজন বলেন, আমাকে জনগণ ভালোবেসেই ইউপি চেয়ারম্যান বানিয়েছিল। গঙ্গাচড়ার মানুষ আমাকে উপজেলা পরিষদে দেখতে চায়। তাই আমি তাদের চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মী কাজ করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে, আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনে তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদে বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশ নিচ্ছেন। তারা হলেন– উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম, ইকরচালি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কবিরুল ইসলাম ও যুবদল নেতা আশরাফুল আলম। তিনজনই দাবি করেন, এলাকার জনগণের প্রয়োজনে তারা নির্বাচন করছেন। দলের অনেক নেতাকর্মী তাদের সঙ্গে কাজ করছেন।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, নির্বাচনে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় রংপুরে সাত নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা মনে করি, এ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। তাই নির্বাচন বয়কট করেছি। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন– এমন অভিযোগ সত্য নয় বলেও দাবি করেন তিনি।-সমকাল
এবিসিবি/এমআই