ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ভ্যাট ১০ শতাংশ কমলেও গ্রাহকরা সুফল পাচ্ছে না
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের (আইএসপি) মাধ্যমে প্রদত্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবায় ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৫ শতাংশ। তবে ভ্যাটের হার কমলেও কোনো সুফল পাবেন না গ্রাহকরা।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) থেকেই নতুন ভ্যাটের হার কার্যকর হবে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের সংগঠন আইএসপিএবি’র সভাপতি আমিনুল ইসলাম হাকিম জানিয়েছে, ভ্যাট ১০ শতাংশ কমলেও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মূল্য কমছে না।
তিনি বলেন, ভ্যাটের হার না কমানো হলে আগামী মাস থেকেই ৩০ শতাংশ ইন্টারনেটের দাম বাড়ত, এখন আর সেটা বাড়বে না, এটাই সুখবর গ্রাহকদের জন্য। এ দিকে আইএসপি’র মাধ্যম প্রদত্ত ইন্টারনেট সেবায় ভ্যাটের হার কমানো হলেও ভ্যাট বা কর হার কোনটিই কমানো হয়নি মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে। বর্তমানে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সম্পুরক শুল্ক ও ভ্যাট এবং সারচার্জ মিলিয়ে মোট ৩৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ কর দিতে হচ্ছে, এশিয়ায় সর্বোচ্চ টেলিযোগাযোগ সেবায় এই করের হার। বিটিআরসি’র তথ্য অনুসারে দেশে ৯২ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ব্যবহার করে মোবাইল ইন্টারনেট। এ কারণে প্রকৃত অর্থেএনবিআরের সিদ্ধান্তে কোনো সুফলই পাচ্ছেন না দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা।
আইএসপিএবি সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে আইন অনুসারে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশের বেশি ভ্যাট আদায়ের নিয়ম থাকলেও ৩৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো আইএসপিগুলোকে। এ নিয়ম আইন বিরোধী।
কিভাবে ৩৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয় জানতে চাইলে তিনি জানান, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার ক্ষেত্রে ৩টি স্তরের মধ্যে দু’টি স্তরে অর্থাৎ ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ সরবরাহকারী আইআইজি এবং ট্রান্সমিশন সেবা দেওয়া কেউই ভ্যাট দিচ্ছে না এনটিটিএন কোম্পানিরা। ৩টি স্তরে ভ্যাট দিতে হচ্ছে শুধু আইএসপিগুলোকে। ফলে ৩ স্তরে মোট ৩৫ শতাংশ ভ্যাটের বিশাল বোঝা আইএসপিগুলোর ঘাড়ে এসে পড়েছিল এবং এটা দেশের আইন বিরোধী। এ কারনেই আইএসপিএবি’র পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় এনবিআরের। কয়েক দফা বৈঠকের পর তিনটি স্তরেই ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। ফলে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও প্রকৃতপক্ষে ১৫ শতাংশ ভ্যাটই দিতে হবে আইএসপিগুলোকে।
এর ফলে গ্রাহকরা কোনো সুফল পাবে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, আসলে আইএসপিগুলো নিজেদের ব্যবসায়িক হিসেব অনুসারে মাসিক প্যাকেজ মূল্য নেয় গ্রাহকের কাছ থেকে।সুনির্দিষ্ট নয় এই প্যাকেজমূল্য। কেউ এক হাজার টাকা রাখে, আবার কেউ ৫০০ টাকা প্যাকেজ মূল্য রাখে বা কেউ হয়ত আরও বেশি রাখে। এ কারণে ভ্যাটের হার কমানোর কোনো প্রভাব পড়বে না এই প্যাকেজ মূল্যের উপর। তবে ভ্যাটের হার না কমানো হলে যার যে প্যাকেজ মূল্য তা উপর ৩০ শতাংশ বাড়তি যোগ হতো আগামী মাস থেকে, এখন আর সেটা যোগ হচ্ছে না।গ্রাহকদের জন্য এটাই সুখবর।