রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদূতদের সতর্ক থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের সতর্ক থাকতে বলেছেন, যাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভ্রান্ত এবং ভূলতথ্যের শিকার না হয়। তিনি বলেন, “আমি বলতে চাই যে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের কাছে অপপ্রচার সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করা। যদি এটা করা হয়, তাহলে মিথ্যা রটনাকারীরা বিভ্রান্তি সৃষ্টির কোনো সুযোগ পাবে না।” তিনি আরও বলেন,“যে সব জায়গায় আন্তর্জাতিক সংস্থা রয়েছে, সেই জায়গাগুলোতে আমাদের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত, যাতে তারাও অপপ্রচার এবং ভূল তথ্যের শিকার হয়ে বিভ্রান্ত না হয় ।” রোমে প্রধানমন্ত্রী তার আবাসস্থলে ইউরোপে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে এসব নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু লোক আছে যারা অপরাধ করে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তারা দেশের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। যারা কখনোই দেশকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে পারেনি, এমন কিছু লোক এবং কিছু অপরাধী যারা অপরাধ করে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তারা দেশের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে নিয়োজিত, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এর ফলে তারা আস্থা হারিয়ে ফেলে।” এটি মানুষকে তাদের অপরাধ প্রবণতা বাড়াতে উৎসাহিত করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে প্রতিরোধ করেছিল, তাদের উপরই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। কিসের জন্য এটা করা হল ?” তিনি বলেন যে তারা একদিকে মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য আওয়াজ তুলছেন, অন্যদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে কথা বলছেন। এই দ্বিচারিতা চলছে বিশ্বময়। প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বিষয়ে তার সরকারের অবস্থানের কথাও উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী মানবাধিকারের কথা বলতে গিয়ে বলেন, মানবাধিকার রক্ষা কেউ করলে, সেটা আওয়ামী লীগই করে, আর যারা মানবাধিকারের কথা বলে- তারা মানুষ হত্যা করে। দেশের নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা তার বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের গুলি করে হত্যা করেছে, তারা এখনো সে দেশে পলাতক রয়েছে। তিনি বলেন, বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা খুনিদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়নি। “মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের সুরক্ষা দেওয়া এবং যারা মানবাধিকার রক্ষা করে, তাদের বিরুদ্ধে যাওয়া- আমি এটিকে একটি খেলা হিসাবে দেখি।” প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, তাঁরা যদি মানবাধিকারে বিশ্বাস না করেন এবং তাঁদের মধ্যে যদি সেই মানবিক দিকগুলো না-ই থাকে, তাহলে কীভাবে তাঁরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন।-বাসস
এবিসিবি/এমআই