Type to search

জাতীয়

নিহত সাবেক মেজর সিনহা হত্যার তদন্ত বাধাগ্রস্ত করছে স্বার্থান্বেষী চক্র

সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনাকে উপজীব্য করে একটি স্বার্থান্বেষী চক্র তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

অ্যাসোসিয়েশন জানায়, দুটি পেশাদার বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর এ অপচেষ্টা অপ্রত্যাশিত ও অত্যন্ত দুঃখজনক।

বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) এক বিবিৃতিতে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জের এসপি মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান, গত ৩১ জুলাই কক্সবাজার জেলার টেকনাফে সাবেক মেজর সিনহা মো: রাশেদ খান নিহত হওয়ার বিষয়টি একটি অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত ঘটনা। এ ঘটনায় সমগ্র দেশবাসীর মতো বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য মর্মাহত ও অত্যন্ত দুঃখিত। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আইনি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে হত্যা মামলা রুজু হয়েছে এবং মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ও বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে, কোন ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হলে, তার জন্য ব্যক্তিই দায়ী থাকবেন; কোন প্রতিষ্ঠান দায় নেবে না। উক্ত যৌথ প্রেস ব্রিফিং এর বক্তব্যকে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে সাধুবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এ ঘটনার দায়-দায়িত্ব নির্ধারণে প্রয়োজনীয় সর্বাত্মক আইনি ও প্রশাসনিক সহযোগিতা প্রদানে তাঁদের যৌথ উদ্যোগ গভীরভাবে আশান্বিত করেছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনকে। বাংলাদেশ পুলিশ এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় এবং আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্বক ব্যবস্থা গ্রহণে অঙ্গীকারাবদ্ধ। উক্ত অ্যাসোসিয়েশন বিশ্বাস করে যে, অতীতের ন্যায় বাংলাদেশ পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যকার বিদ্যমান আন্তরিক, আস্থা, বিশ্বাস ও শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্পর্ক অটুট থাকবে এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ভবিষ্যতে তা আরও দৃঢ় ও সংহত হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গভীর বিস্ময় ও উদ্বেগের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন লক্ষ্য করছে যে, এ ঘটনাকে উপজীব্য করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ইউটিউব, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং কিছু কিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে ব্যবহার করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নানামুখী অপপ্রচার চালিয়ে চলমান আইনি কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত ও প্রভাবিত করার জন্য তৎপর রয়েছে। উদ্ভূত এ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ দুটি পেশাদার বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর এ অপচেষ্টা অপ্রত্যাশিত ও অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এ অশুভ শক্তির এ ধরণের ঢালাও নেতিবাচক প্রচার প্রচারণা সত্ত্বেও তাদের মনোবল অটুট রেখে দেশ ও জাতির কল্যানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তারা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবেন। আমরা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বলতে চাই, রাষ্ট্রের প্রতি পূর্ণ আনুগত্যশীল থেকে সংবিধান ও মানবাধিকার সমুন্নত রেখে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য দেশ ও মানুষের কল্যাণে সর্বদা কাজ করে যাবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের আগামী দিনের পথ রচিত হবে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্যে ও সহযোগিতায়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা, সমবেত অংশগ্রহণ ও নতুন প্রত্যয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একযোগে দেশ ও মানুষের কল্যাণে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব। অতীতের ন্যায় বর্তমান সময়েও স্বার্থান্বেষী চক্র বিশেষের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে আইনের সঠিক প্রয়োগ এবং জনবান্ধব পুলিশি কার্যক্রম নিশ্চিতকল্পে এ দেশের মানুষ সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

Translate »