বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের কারণ
বিশ্বের কয়েকটি অঞ্চলে বিধ্বংসী ঝড় নিয়মিত আছড়ে পড়ে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়। বিজ্ঞানীরা আঞ্চলিক প্রবণতা ও ঝড়ের গতি প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে এর চরিত্র বোঝার চেষ্টা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে কেন এত হারিকেন ঝড় দেখা যায়? ভৌগলিক অবস্থানই এমন বিপর্যয়ের কারণ। হারিকেন ক্রান্তীমণ্ডলীয় অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়গুলোর অন্যতম৷ বাতাসের চরম গতি ও প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে এমন ঝড় বিশাল ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়।
বিশ্বের কয়েকটি অঞ্চলে বিধ্বংসী ঝড় নিয়মিত আছড়ে পড়ে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়।
ফলে হারিকেন মানুষের ভয়ের কারণ। এমন ঘূর্ণিঝড় কয়েকশো কিলোমিটার আকার ধারণ করতে পারে এবং কয়েক ঘণ্টা ধরে একটি জায়গায় ধ্বংসলীলা চালাতে পারে। বিষুব রেখার চারিদিকে পানির বিস্তৃত অংশে এমন ঝড় দানা বাঁধে।
তবে সেখানকার তাপমাত্রা কমপক্ষে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে হবে। একমাত্র অ্যাটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব দিকে যে ঘুর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়, সেগুলিকে হারিকেন বলা চলে। জুন থেকে নভেম্বর মাস হারিকেনের মরসুম হিসেবে পরিচিত।
সে সময়ে প্রচুর পরিমাণ পানি বাষ্পীভূত হয় এবং উষ্ণ বাতাসের সঙ্গে উপরে উঠে যায়। আমাদের পৃথিবী ঘুর্ণীয়মান গোলক হওয়ায় বাতাস বিষুবরেখার উত্তর ও দক্ষিণে ধেয়ে যায়। বাতাস ঘুরতে থাকে, দৈত্যাকার ঘূর্ণির সৃষ্টি হয়। ঘূর্ণির মাঝে তথাকথিত ‘আই’ বা চোখ থাকে।
হারিকেনের সেই কেন্দ্রস্থলে বাতাস বা বৃষ্টির কোনো চিহ্ন থাকে না। ক্রান্তিমণ্ডলীয় ও উপক্রান্তীয় অক্ষরেখা বরাবর এমন ঘুর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে সেগুলো সাধারণত পশ্চিম থেকে উত্তর পশ্চিম দিকে ধেয়ে যায়। অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে হারিকেন প্রায়ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের কাছে এসে পড়ে।
আমাদের পৃথিবী ঘুর্ণীয়মান গোলক হওয়ায় বাতাস বিষুবরেখার উত্তর ও দক্ষিণে ধেয়ে যায়।
সেখানকার উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত সেই হারিকেনকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। ২০১৭ সালে নাসার এক স্যাটেলাইট অ্যাটলান্টিকের উপর তিনটি ঘুর্ণিঝড়ের আগমনের ছবি তুলেছিল। মহাকাশ থেকে ইতোমধ্যে বিস্তৃতভাবে ঘুর্ণিঝড়ের উপর নজর রাখা যাচ্ছে।
ফলে হারিকেনের উৎপত্তি ও গতিপথ নথিভুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে প্রতি বছর হারিকেনের গতিপ্রকৃতিও ধরা পড়ছে। দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকটি হারিকেন ইস্ট কোস্টের উপর দিয়ে চলে যায়। অন্যদিকে পশ্চিম উপকূল রেহাই পায়। সেখানে ঝড় পশ্চিম দিকে সমুদ্রের উপর চলে যায়।
সেখানকার উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত সেই হারিকেনকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়ও ঘুর্ণিঝড় দেখা যায়। সেখানে ঘূর্ণিঝড়ের নাম হারিকেন নয়, টাইফুন রাখা হয়েছে। প্রায় এক তৃতীয়াংশ ঘূর্ণিঝড় সেখানেই সৃষ্টি হয়। বিশ্বের অন্য কোনো অঞ্চলকে ঝড়ের এমন ধাক্কা সামলাতে হয় না।
এবিসিবি/এমআই