আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক মরগান
টেস্টে ক্রিকেটে যখন নতুন যুগের আগমনি বার্তা দিচ্ছে ইংল্যান্ড। ঠিক তার পরের দিনই আরেকটি যুগের অবসান ঘটল। ইংল্যান্ডকে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতানো একমাত্র অধিনায়ক এউইন মরগান বিদায় জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে; যা গত পরশুদিন থেকেই প্রত্যাশিত ছিল, গতকাল তা আর গুঞ্জনে আটকে রাখেননি মরগান। আবেগে ভারাক্রান্ত মনে জানিয়ে দিলেন অবসরের সিদ্ধান্তটি। বিদায় নিলেন সাদা বলে ইংল্যান্ড ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রভাবশালী ক্রিকেটার হিসেবে।
চোট আর বাজে ফর্মের চাপে দীর্ঘদিন ধরেই তাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। বয়সটাও ৩৫ পেরিয়েছে। কিছু দিন আগে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দুই ম্যাচে শূন্য রানের পর তীব্র হয়ে উঠে সেই সমালোচনা। মরগানও বুঝে ফেলেন তাকে দিয়ে আর হচ্ছে না। সামনেই টি-২০ বিশ্বকাপ, তাই সরে দাঁড়ানোর জন্য এখনই মোক্ষম সময় বলে ভেবেছেন তিনি, ‘সতর্কতা অবলম্বন ও বিবেচনার পর আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার। আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আনন্দদায়ক অধ্যায়টি থেকে বিদায় নেওয়াটা সহজ ছিল না তবে বিশ্বাস করি ব্যক্তিগতভাবে ও ইংল্যান্ডের সাদা বলের ক্রিকেটের জন্য এটাই সঠিক সময়। আমি ভাগ্যবান দুটো বিশ্বকাপ জেতা দলের হয়ে খেলতে পেরে তবে আমি বিশ্বাস করি সীমিত ওভারে ইংল্যান্ডের ভবিষ্যৎ আগের চেয়ে অনেক বেশি উজ্জ্বল।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মরগানের শুরুটা হয়েছিল আয়ারল্যান্ডের হয়ে ২০০৬ সালে। কিন্তু সেই মরগানই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের রূপ বদলে দেওয়ার অন্যতম কারিগর। অভিষেকের তিন বছরের মাথায় ঢুকে যান ইংল্যান্ড জাতীয় দলে। ২০১৫ ওয়ানডে নেতৃত্ব পাওয়ার পর কোচ ট্রেভর বেলিসকে পুরো দলের চেহারাই পালটে দেন তিনি। একইভাবে বদল আনেন টি-২০ ক্রিকেটেও। ভয়ডরহীন মানসিকতা নিয়ে তার অধিনায়কত্বেই ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পায় ইংল্যান্ড। ঘুচায় দীর্ঘদিনের আক্ষেপ।
২৪৮ ওয়ানডের মধ্যে কেবল ২৩টিই আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন আয়ারল্যান্ড। ইংল্যান্ডের হয়ে তার ব্যক্তিগত অর্জনও কম নয়। ওয়ানডে ও টি-২০ ক্রিকেটে দলটির হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ও সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা ক্রিকেটার তিনি। আছে এক ওয়ানডে ইনিংসে সর্বোচ্চ (১৭) ছয় মারার রেকর্ড। পরিসংখ্যানের বিচারে মরগানকে হয়তো কিংবদন্তি বলা যাবে না। তবে ইংল্যান্ড ক্রিকেটের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে থাকবেন তিনি।
এবিসিবি/এমআই