Type to search

Lead Story আন্তর্জাতিক জাতীয় বাংলাদেশ

মার্কিন অর্থনৈতিক জোটে যোগদান প্রশ্নে বাংলাদেশকে ফের সতর্ক করলো চীন

অনলাইন ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের  নেতৃত্বাধীন নব প্রতিষ্ঠিত অর্থনৈতিক জোটে (আইপিইএফ) বাংলাদেশের যোগদান বিষয়ে ফের সতর্ক করেছে চীন। ঢাকাস্থ চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ওই জোটে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা নাকচ করে বলেন, কোনো জোটে যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত একান্তই বাংলাদেশের। তবে বেইজিং আশা করে এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার এবং  দেশটির জনগণ অবশ্যই বিচক্ষণতার স্বাক্ষর রাখবে।

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় লি জিমিং এ নিয়ে কথা বলেন।চীনের বাজারে বাংলাদেশের প্রবেশাধিকার বিষয়ক সেমিনারটি বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিসিসিআই) এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড) যৌথভাবে আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় চীনের সঙ্গে বাণিজ্য-ঘাটতি কমাতে ব্যবসায়ীদের আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, চীনে রপ্তানি বাড়াতে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের কোনো বিকল্প নেই। বাণিজ্য সম্প্রসারণে তিনি বিশ্লেষকদের পরামর্শ আমলে নেয়ার আশ্বাসও দেন।

সেমিনারে দেয়া বক্তৃতায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি বলেন, আমাদের অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা জরুরি। সবাই জানেন, সম্প্রতি খারাপ কিছু ঘটেছে। এ নিয়ে শোরগোল হচ্ছে। আমাদের এই অঞ্চলে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু ঘটেছে। অকাস (অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের জোট), কোয়াড (জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট) ও আইপিইএফ (ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন অর্থনৈতিক জোট) ছাড়াই এক দশক ধরেই আমরা ভালো আছি।

হঠাৎ করে এ বিষয়গুলোকে সামনে আনা হচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এসব ছাড়াই আমরা আরও ভালো থাকবো। কাজেই আমাদের এসবে যোগ দেয়ার প্রয়োজন আছে কি না? তা নিয়ে আরও ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে বেইজিংয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামানের সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন নেতৃত্বে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ঘিরে যেসব জোট বা বলয় তৈরি হয়েছে তাতে যোগদান প্রশ্নে বাংলাদেশকে সতর্ক করে চীন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া বিষয়ক মহাপরিচালক লিউ জিনসং বাংলাদেশ দূতের সঙ্গে বৈঠকে জোট নিয়ে সতর্ক করা ছাড়াও দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করেন। সেই আলোচনার ধারাবাহিকতায় ঢাকায় বুধবারের সেমিনারে রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এ বিষয়ে (মার্কিন উদ্যোগে যোগদান) বাংলাদেশ যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে যথেষ্ট বিচক্ষণতার পরিচয় দিবে। ঢাকা এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তটিই নিবে বলেও আশা করেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা এ অঞ্চলে শান্তি চাই। আমাদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। এটি বাংলাদেশসহ যেকোনো রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চীনা দূত এ-ও বলেন, এখন সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয়, কীভাবে চীনে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়ানো যায়। চীনের উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে।
বিসিসিসিআইয়ের সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজার সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন র‌্যাপিডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক। র‌্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক এম আবু ইউসুফের সঞ্চালনায় সেমিনারে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান ও বিসিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

Translate »