মিরপুরে অনুশীলনে পাকিস্তানের পতাকা, গণমাধ্যমে সমালোচনার ঝড়

তিন টি-টোয়েন্টি ও ২ টেস্ট খেলতে বাংলাদেশ সফরে এসেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশ সফরে এসে দ্বিতীয় দিনের অনুশীলন করছে পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দল। আজ মঙ্গলবারও নেটের চারদিকে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা টানিয়ে এই অনুশীলন করছেন দেশটির ক্রিকেটাররা।
প্রথম দিনও অনুশীলন চলাকালীন একাডেমি মাঠের ২ পাশে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা উড়তে দেখা যায়। যা নিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কেননা অন্য কোনো দেশ তাদের অনুশীলনের সময় এমনটি এর আগে কখনো করেনি। তাই অনুশীলন ছাপিয়ে উত্তাপ ছড়াচ্ছে তাদের বিতর্কিত পতাকা উত্তোলন ইস্যু নিয়ে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যারা সমালোচনা করছেন তাদের অনেকেই বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্কের ঐতিহাসিক টানাপোড়েনের কথা উল্লেখ করে অনুশীলনের সময় মাঠে পতাকা ওড়ানোকে একটা রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে দেখতে চাইছেন। তবে অনেকেই আবার এটাকে খেলোয়াড়ি মেজাজে নেয়ার ব্যাপারেই আগ্রহী।
গ্যালারিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশে পতাকা দোলানোর নিয়ম-নীতি থাকলেও অনুশীলনের সময় সরাসরি মাটিতে পাকিস্তানের পতাকা গাঁথাকে অনুচিত মনে করছেন অনেকে।
বাংলাদেশের এক সমর্থক টুইটারে লেখেন, ‘ফিরে যাও পাকিস্তান। বাংলাদেশের এই সিরিজ বন্ধ করে দেওয়া উচিত। বাংলাদেশে পাকিস্তানের যে কোনও পতাকা নিষিদ্ধ করা উচিত।’
আরেক জন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে বহু দল খেলতে এসেছে। তারাও অনুশীলন করেছে, কিন্তু কোনও দলকে দেখা যায়নি তাদের পতাকা মাটিতে পুঁতে অনুশীলন করতে। কিন্তু পাকিস্তান এমন কেন করল? এটা কিসের ইঙ্গিত।’
এর আগে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, জামায়াত ইসলামী এবং তাদের সহযোগীরা এখনও আছে। তরুণদের মধ্যে তাদের একটা বিরাট প্রভাব এবং পাকিস্তানের প্রতি প্রেম আছে। পাকিস্তানকে এ ব্যাপারে কৈফিয়ত চাইতে হবে এবং তাদের এই ঔদ্ধত্যের জন্য বাংলাদেশের কাছে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে। তা না করলে তাদের টিমের এই দেশে খেলবার কোনও দরকার নেই।
এ নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কোন মন্তব্য না করলেও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বলছে, মাস দুয়েক ধরে অনুশীলনে পতাকা ওড়ানোর এই রীতিটি মেনে আসছে পাকিস্তান দল।
এমন পরিস্থিতিতে এর ব্যাখা দিয়েছেন পাকিস্তানের মিডিয়া ম্যানেজার ইব্রাহীম বাদিস। তিনি বলেন, পাকিস্তানের হেড কোচ হিসেবে সাকলায়েন মুশতাক দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে জাতীয় দলে পতাকা লাগানোর প্রচলন শুরু হয়েছে। সর্বপ্রথম নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে এটি চালু হয়েছিল। এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তা অনুসরণ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সাকলায়েন মুশতাক এর আগে ন্যাশনাল হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের (এনএইচপিসি) ক্যাম্পেও এমন করেছিলেন। এ ছাড়া পতাকার প্রচলন চালু রেখেছিলেন অনূর্ধ্ব-১৬ এবং অনূর্ধ্ব-১৯ দল নিয়ে কাজ করার সময়ও।
পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সব ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ১৯ নভেম্বর মাঠে গড়াবে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। পরের দুই টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে ২০ ও ২২ নভেম্বর। সিরিজের সবগুলো ম্যাচই হবে দিবারাত্রির।
এবিসিবি/এমআই